জনপ্রিয় ব্যান্ডতারকা ও সংগীত পরিচালক শাফিন আহমেদ।
জনপ্রিয় ব্যান্ডতারকা ও সংগীত পরিচালক শাফিন আহমেদ কয়েক দশক ধরে নিয়মিত গান উপহার দিচ্ছেন। ব্যান্ড মাইলসের গানের পাশাপাশি নিজের একক গানের মাধ্যমে জয় করে চলেছেন দর্শকহৃদয়। নতুন গান ও নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকা এই সংগীতশিল্পী সংগীতের নানা দিক নিয়ে কথা বললেন ইত্তেফাকের সঙ্গে।
ব্যান্ডের মূল জায়গা বা উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা কিন্তু কনসার্ট। কিন্তু করোনার কারণে সব ধরনের কনসার্ট বন্ধ থাকায় মনে হচ্ছে ব্যান্ড ঝিমিয়ে গেছে। তবে আবার কনসার্ট শুরু হলে আগের চিত্র ফিরে আসবে।

বর্তমান কাজের ব্যস্ততা নিয়ে জানতে চাই—
সম্প্রতি ‘আয়না ভেঙে যায়’ শিরোনামের একটি গান রি-মাস্টার করে লিরিক্যাল ভিডিও আকারে প্রকাশ করেছি। পড়শীকে দিয়ে আমার ‘এই স্বপ্ন’ গানটি রিমেক করছি এবং শিগগিরই ‘দ্য পিয়ানো লাউঞ্জ’ অনুষ্ঠানে আমার ৪টি গান শোনা যাবে। পাশাপাশি আমার ‘ডাবল বেইজ’ প্রডাকশন হাউজ থেকে আমার ছেলে ওজি’র একটি গানসহ নতুন-পুরনো অনেক শিল্পীর বেশকিছু গান রিলিজের কাজ চলছে। এছাড়া নব্বই দশকে রিলিজ করা আমার গানগুলো রি-মাস্টার করে ডিজিটাল প্লাটফর্মে প্রকাশ করছি।
ব্যান্ড ও একক গানের পাশাপাশি ইদানিং নাটক ও চলচ্চিত্রের গানের আপনাকে সরব হতে দেখা যাচ্ছে। তাহলে পরবর্তী পরিকল্পনা চলচ্চিত্র-নাটক নিয়ে করছেন?
নাটক-চলচ্চিত্র কিন্তু আমার কাজের প্রধান জায়গা না। আমি নিজের প্রজেক্টগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই। তবে মাঝে মাঝে নাটক-চলচ্চিত্রে কাজ করব এবং শিগগিরই আমার হাউজ থেকে কিছু গান এই মাধ্যমগুলোতে আসছে।

মাইলস ও আপনার একক গান দুটি দুই সত্তা। এই দুটি জায়গা কীভাবে সমন্বয় করছেন?
সমন্বয় করা খুব কঠিন হচ্ছে না। আসলে মাইলসের কাজগুলো তো ডিজিটাল প্লাটফর্মে আছে। কিন্তু আমার গানগুলো নেই বললেই চলে। তাই চেষ্টা করছি সবগুলো গান এই মাধ্যমে তোলা।
আপনার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ডাবল বেইজ’-এর কার্যক্রম কেমন চলছে?
গানের অডিও এবং ভিডিও তৈরি করাই আমার লেভেল কোম্পারি মূল লক্ষ্য। এরইমধ্যে কিন্তু আমার স্টুডিও থেকে নিয়মিত নতুন নতুন গান রিলিজ দিচ্ছি।
বেশিরভাগ লেভেল কোম্পানি নাটক বা ইউটিউব কন্টেন্ট নির্মাণের দিকে ঝুঁকছে। সেই জায়গায় নিজের প্রতিষ্ঠান নিয়ে কী বলবেন?
আমি নাটক নির্মাণের মাঝে এখন নেই। তবে কন্টেন্ট নির্মাণের কথা যদি চিন্তা করি তবে বলবো, নাটক আমার কন্টেন্ট না। আমি গানের মানুষ, গান নিয়েই থাকতে চাই। তাছাড়া নতুন অনেক মেধাবী শিল্পী ভিন্ন ধরনের কাজ করছেন এবং হিপহপ আমাদের দেশে এখন বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এগুলো নিয়ে কাজ করছি এবং ভবিষতেও করার ইচ্ছে আছে।

এখন শিল্পীরা লেভেল কোম্পানির কাছে না গিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে গান প্রকাশ করছেন। আপনি নিজেও এই পথে হাঁটছেন। এর কারণ কী?
ইউটিউব যেহেতু পে করে সেহেতু এখানেই তারা গান প্রকাশ করছে। তবে যারা শুধু ইউটিউব নির্ভর হচ্ছে তাদের কাজের পরিধিটা প্রসার হচ্ছে না। শুধু ইউটিউব নির্ভর গান হওয়া দুঃখজনক। কারণ অনেক মাধ্যম এখন রয়েছে গান প্রকাশের। সব মাধ্যমেই গান প্রকাশ করা উচিত।

অনেকেই বলেন ব্যান্ড সংগীতের জামানা শেষ! আপনি সফল ব্যান্ডতারকা হিসেবে কী মন্তব্য করবেন?
এই বিষয়টিতে আমি একমত হতে পারছি না। ব্যান্ডের মূল জায়গা বা উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা কিন্তু কনসার্ট। কিন্তু করোনার কারণে সব ধরনের কনসার্ট বন্ থাকায় মনে হচ্ছে ব্যান্ড ঝিমিয়ে গেছে। তবে আমার মনে হয়, আবার কনসার্ট শুরু হলে আগের চিত্র ফিরে আসবে।
বেশ কয়েক সংগীত সংশ্লিষ্ট সংগঠন তৈরি হয়েছে। এতে সম্ভাবনা বা পরিবর্তন কতটা দেখতে পাচ্ছেন?
এখনই পরিবর্তন দেখার সময় এখনো হয়নি। কারণ কিছুদিন হলো বেশ কয়েকটি বড় বড় সংগঠন যাত্রা শুরু করেছে। আমি নিজেও দুটি বড় দুটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। এরইমধ্যে আমরা বেশকিছু দাবি কার্যকর করার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কাজ করছি। আশা করছি ভালো কিছুই হবে।
ইত্তেফাক/জেডএইচডি