নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম।
বাংলা চলচ্চিত্র এ সময়ের অন্যতম ব্র্যান্ড নির্মাতার নাম গিয়াস উদ্দিন সেলিম। তার নির্মাণে ‘মনপুরা’ ছবিটি বাংলা চলচ্চিত্রের গবেষণার পাঠ্য। তবে নিজের আলস্য এবং পারিপার্শ্বিকতায় এই তুমুল মেধাবী নির্মাতার ছবি কম পেয়েছি আমরা। সুখের খবর হলো, আবারো তিনি নির্মাণের ছন্দে ফিরেছেন। কথা বললেন বর্তমান কাজ ও এ সময়ের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে।
আপনার নতুন চলচ্চিত্র ‘গুনিন’ নিয়ে জানতে চাই—
আগামী মাসের ৭ তারিখ থেকে ছবিটির শুটিং শুরু করব। আপাতত শুটিং শুরুর প্রস্তুতি নিয়েই ব্যস্ততা চলছে। এছাড়া নতুন কোনো কাজের খবর নেই। এই ছবিটিই আগে যত্ন নিয়ে শেষ করতে চাই।

‘গুনিন’ ছবিতে শুরুতে ফারিয়াকে নেওয়ার গুঞ্জন থাকলেও পরবর্তীতে পরীমনিকে নেওয়ার কথা শোনা গিয়েছিল। আসলে কাকে দেখতে পাবেন দর্শকরা?
দেখুন, একেক সময় একেকভাবে মিডিয়াতে খবর বেরিয়েছে। নিউজগুলোর আসলে তেমন ভিত্তি ছিল না। এখনো আমি সিদ্ধান্ত নিইনি যে, ছবিটিতে কাকে কাস্ট করব। তবে দু-চার দিনের মাঝে এই বিষয়ে জানাতে পারব।
আরও পড়ুন:
যোগ্যতা থাকলে ‘গডফাদার’ লাগে না: ইয়ামি
আপনি একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের কথা বলেছিলেন। কিন্তু এখানো ছবিটি আলোর মুখ দেখছে না কেন?
হ্যাঁ, ‘অপরেশন জ্যাকপট’ শিরোনামের একটি ছবি নির্মাণের করার কথা ছিল। তবে একটু দেরি হলেও ছবিটি নির্মিত হবে। আসলে শুরুতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ছবিটি করার কথা থাকলেও কিছু কারণে তারা করতে পারেনি। এখন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছবিটিতে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে। তাই এখনই হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ এখনো সুযোগ আছে ছবিটি নির্মাণের। এছাড়া আমারও অনেক স্বপ্ন আছে ছবিটি নির্মাণ করার। আশা করছি শিগগিরই ভালো একটি খবর দিতে পারব।
আপনি বরাবরই অ্যাকশন ঘরানার বাইরে ছবি নির্মাণ করেন। এর কারণ কী?
আমার কাছে মনে হয়, অ্যাকশন নির্ভর চলচ্চিত্র আমি নির্মাণ করতে পারব না। তাই মূলত এই জায়গা থেকে দূরে থাকি।

নতুন মাধ্যম ওটিটি চলচ্চিত্রের জন্য কতটা ইতিবাচক বলেন মনে করেন?
ওটিটি আমাদের জন্য ভালো একটি কাজের সুযোগ তৈরি করবে। কারণ এখন তো দিনদিন আমাদের হল বন্ হচ্ছে। বলা চলে, ২০-২৫টা হলে ছবি দেখার মতো পরিবেশ রয়েছে। সেই জায়গায় হলের পাশাপাশি ওটিটিতে ছবি রিলিজ দিলে হয়তো আমরা কিছু মুনাফা পেতে পারি।
কিন্তু শুরুতেই তো সিন্ডিকেটের কথা শোনা যাচ্ছে। আদৌ কী আপনারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন?
আগে সিনেমায় এক ধরনের সিন্ডিকেট ছিল। নির্ধারিত শিল্পীকে দিয়ে কিছু কাজ করানো হতো। কিন্তু ওটিটিতে সিন্ডিকেট কীভাবে আসবে? এই মাধ্যমে সিন্ডিকেট অসম্ভব! কারণ এখানে তো ব্যক্তি মালিকানায় কাজ করানো হয়। তারা যাকে খুশি তাকে দিয়ে কাজ করাতে পারেন। আর স্বাধীনতা নিয়ে বলবো, অবশ্যই নির্মাতাদের স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ ওটিটিতে রয়েছে।

সংকটের ভেতর দিয়ে চলা চলচ্চিত্র আদৌ কী হলে ফিরতে পারবে?
আমাদের চলচ্চিত্র দীর্ঘদিন ধরেই সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। তার ওপর করোনার কারণে অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। তবে আমি মনে করি, আবার চলচ্চিত্র ঘুরে দাঁড়াবে। দেখুন, আগে গান শুনতাম কনসার্টে, এরপর অডিও, টিভি থেকে ইউটিউব! তবু কিন্তু কনসার্টের চাহিদা কমেনি। সিনেমাও কিন্তু ৪-৫শ’ মানুষ কনসার্টের মতো করেই দেখে। সেই আবেদন কখনোই শেষ হওয়ার নয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিশ্চয় দর্শক আবার হলমুখী হবে। কারণ তারা সিনেমা দেখতে চায়।