সুরের মূর্ছনায় তারুণ্যের উচ্ছ্বাস

‘তুমি চেয়ে আছ তাই, আমি পথে হেঁটে যাই, হেঁটে হেঁটে বহুদূর, বহুদূর যেতে চাই।’ শিরোনামহীনের এই বহুদূর কত দূরে গিয়ে শেষ হবে জানা না গেলেও সুরের মূর্ছনায় তারুণ্যের উচ্ছ্বাসকে বহুদূর নিয়ে গেছে।

গতকাল শুক্রবার গোধূলির ঘুম ভাঙে এমন সুরে আর তারুণ্যে আবেগের ছন্দে। শহরের কোলাহল ছেড়ে শুধু সুরের মায়ায় আধো অন্ধকারে প্রাক্তনের শেষ কথা ভেবে কারো কারো চোখ ছলছল করে ওঠে। প্রাক্তনের শেষ না বলা কথার ইতি মেলানোর বৃথা চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে ওঠে আরো কজন। বুকে চাপা বেদনা নিয়েই তারা গলা মিলায় এনকোরের ‘এ কী ভুল করেছ তুমি  আমায় ভুলে গিয়ে, কত দূর যাবে তুমি আমায় ফেলে একা’ গানটির সঙ্গে। সেই একই মঞ্চে আনন্দ হুল্লোড়েরও কমতি ছিল না। সবাই তাল মেলায় আর্টসেলের ‘তোমরা কেউ কি দিতে পারো প্রেমিকার ভালোবাসা’র সঙ্গে।

এমনই এক প্রাণের মেলা বসেছিল রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) পুষ্পগুচ্ছ হলে। যেখানে গানের সুরে উদযাপন করা হয় আন্তর্জাতিক কফি দিবস। বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে আর্টসেল, শিরোনামহীন, নেমেসিস, অ্যাভোয়েড রাফা, স্যাভেজারি, এনকোরের মতো রক ব্যান্ডের ঝংকার। সঙ্গে কফি প্রেমীদের জন্য ছিল নানা ব্র্যান্ডের কফির আয়োজন।

আয়োজকরা বলেছেন, অনুষ্ঠানটি মূলত কফি প্রেমীদের জন্যই। কফি প্রেমীদের মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের সুযোগ করে দেবে দেশের সেরা সব কফি শপগুলোর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার। আর গানের সুরে বিমোহিত হয়ে কফিশপগুলোর পরিবেশিত ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের কফি উপভোগ করার। ব্র্যান্ডমিথ কমিউনিকেশনের আয়োজনে এবারই দেশে প্রথমবার ‘কফি কার্নিভ্যাল’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ড্যান কেক ও নেসক্যাফেও অংশ নেয়।

আয়োজকদের একজন ফুয়াদ মনিরুল বলেন, ‘করোনার লম্বা লকডাউনের পর এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পেরে আমরা খুব আনন্দিত। সব কিছু মাথায় রেখে খুব বেশি টিকিট রাখা হয়নি। দুপুরের আগেই সব টিকিট শেষ হয়ে গেছে। করোনার স্বাস্থ্যবিধি মাথায় রেখেই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি।’

আবির রহমান নামের একজন দর্শক বলেন, ‘অনেক দিন পর কনসার্ট হচ্ছে। এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। নিজের প্রিয় শিল্পীদের আবার কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি, আবার তাঁদের গানে গলা মিলাতে পারছি।’

রায়হানুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে হলরুমে ঢোকার ক্লান্তি যেন দূর হয়ে গেছে। বাইরে থেকে যখন মিউজিকের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম,  তখন মন শুধু আনচান, কখন ঢুকব।’ হাসতে হাসতে বললেন, ‘এসেই চিৎকার শুরু করেছি।’

হলের ভেতর সাজানো কফিশপগুলোতেও ছিল দর্শক-শ্রোতার আনাগোনা। গানের ফাঁকে কিছুটা সুযোগ পেলেই যে যার পছন্দের কফিতে চুমুক দিচ্ছিল। অনেকে নতুন স্বাদের কফিও উপভোগ করেছে। পাশাপাশি অনেকের নজর ছিল পোলারের আইস্ক্রিম শপ ও ড্যান কেকের মজাদার সব খাবারের প্রতি।

LEAVE A REPLY