‘উত্তর কোরিয়ায় নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা উচিত’

করোনারএই সময়ে উত্তর কোরিয়া অনেক বেশি বিচ্ছিন্নতার মধ্যে চলে যাওয়ায় অনাহারে দুর্ভোগ পোহানোর ঝুঁকিতে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর আরোপ করা জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা উচিত বলে মত দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক এক তদন্ত কর্মকর্তা।

উত্তর কোরিয়ার মানবাধিকার-বিষয়ক এই বিশেষ জাতিসংঘ কর্মকর্তা টমাস ওহেয়া কিন্টনা এক প্রতিবেদনে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার অবনতিশীল মানবাধিকার পরিস্থিতি সংকট হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর বিশ্বেরও উত্তর কোরিয়ার জনগণের দুর্দশা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। এ পরিস্থিতিতে ‘দেশটির ওপর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আবারও ভেবে দেখা এবং মানবিক দিক বিবেচনায় কিংবা জীবন বাঁচাতে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনে এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা উচিত। যাতে দেশটির জনসাধারণের জন্য পর্যাপ্ত জীবনযাত্রামান বজায় থাকার অধিকার সমুন্নত রাখা সম্ভব হয়।’

N Korea further developed nuclear weapons programme in 2020: UN | Nuclear  Weapons News | Al Jazeera

টমাস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই আহ্বান জানিয়েছেন। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করার কথা রয়েছে ২২ অক্টোবরে। উত্তর কোরিয়া টমাসের ম্যান্ডেটকে স্বীকৃতি দেয় না এবং তার সঙ্গে কোনো সহযোগিতাও করে না; এমনকি টমাসের জেনেভা মিশন নিয়েও তাদের তাত্ক্ষণিক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পিয়ংইয়ং সরকার বিদেশি গণমাধ্যম থেকে প্রশ্ন গ্রহণ করে না বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন গত জুনে দেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। গত বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে খাদ্যসমস্যা দেখা দেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে কোভিড মহামারির কারণেও জনগণকে মূল্য দিতে হচ্ছে বলে স্বীকার করেছিলেন তিনি।

তবে এপ্রিলে উত্তর কোরিয়ার শিশুদের অপুষ্টিতে ভোগা নিয়ে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা। উত্তর কোরিয়া কোভিড-১৯-এ কারো আক্রান্ত হওয়ার খবর জানায়নি। তাছাড়া দেশটি কোভিড ঠেকাতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ সীমান্তও বন্ধ রাখার মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু বিশেষ জাতিসংঘ কর্মকর্তা টমাস বলেন, এতে অনেক উত্তর কোরীয়রই আয় কমে গেছে, বিশেষ করে যারা চীন সংলগ্ন সীমান্তে বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল তারা সমস্যায় পড়েছে। তার ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব তো আছেই।

What to know about North Korea and its weapons programs - ABC News

তিনি বলেন, ‘জনগণের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা খুবই গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক শিশু এবং বয়স্ক মানুষ অনাহারে থাকার ঝুঁকিতে আছে। চীন থেকে পণ্য সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তর কোরিয়ায় জরুরি চিকিত্সাসামগ্রী ও ওষুধ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। মানবিক ত্রাণ সংগঠনগুলোও ওষুধ ও অন্যান্য পণ্য সরবরাহ আনতে পারছে না।’

টমাস বলেন, ‘কড়া ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব এবং চিকিত্সা সুবিধা না থাকায় বেশির ভাগ কূটনীতিক এবং ত্রাণকর্মী উত্তর কোরিয়া ছেড়ে চলে গেছে। কোভিড টিকাদানে অগ্রগতি নেই, নারী ও শিশুস্বাস্থ্য, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থারও অবনতি হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশটির মানবিক পরিস্থিতির এই অবনতি সংকটে রূপ নিতে পারে। তাই তা অবশ্যই এড়ানো উচিত।’ রয়টার্স।

LEAVE A REPLY