দুই সপ্তাহ ধরে বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম। পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, চিনি, মসুর ডাল, তেল ও মুরগির দাম বেড়েছে। তবে বাজার ভেদে ডিমের দামে তারতম্য রয়েছে। কোথাও ডজনপ্রতি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়, কোথায় ১১০টাকায়। আর হাঁসের ডিম কোথাও ডজনপ্রতি ১৬৫ টাকা, কোথাও ১৭৫ টাকা।
শুক্রবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও কাওরান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
কাওরান বাজারে গত দুই সপ্তাহ ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। তবে ডিমের দাম কমেছে বলে জানালেন কয়েকজন বিক্রেতা।
হামিদ স্টোরের বিক্রেতা ফাহিম হোসেন বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে। তবে ডিমের দাম কমেছে।’
কাওরান বাজারের একটি ডিমের দোকান।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজ ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬৫, চিনি ৬১ থেকে ৮০ ও মসুর ডাল ৭০ টাকা থেকে ৯০ টাকা। তবে চালের দাম কমেছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। মিনিকেট দাম কমে ৬৫ টাকা থেকে ৬০, আটাশ ৫৫ থেকে ৫০ ও নাজিরশাইল ৭০ থেকে কমে ৬৫ টাকা।
তবে বেড়েছে মুরগির দাম। বয়লার মুরগি ১৪০ থেকে বেড়ে ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু দেশি মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সোনালী মুরগি ২২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিভিন্ন ব্যান্ডের তেলের দাম প্রতি লিটারে ৭ টাকা বেড়েছে। প্রতি ৫ লিটার তেলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬০ টাকা।
কাওরান বাজারের একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান।
প্রতিদিন জেনারেল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী আব্দুল কুদ্দুস জানান, পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, এজন্য বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমদানি কম হচ্ছে, এজন্য দাম বেড়ে গেছে।’
তবে, দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ভিন্নমত দিলেন বরিশাল জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. খালিদ হোসেন চৌধুরী। দাম কেন বাড়ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে দাম বেড়েছে। আমাদের পাইকারি বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, এজন্য বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
এদিকে নিত্যপ্রয়োজনী পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের। বেড়েছে ব্যয়। এজন্য আয়-ব্যয়ের সামঞ্জ্যহীনতা দেখা দিচ্ছে।
কাওরান বাজারের একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান।
কাঁচামরিচ কিনছিলেন একটি বেসরকারি ফার্মাসিউটিক্যালসে চাকরি করেন আব্দুল আলীম। বর্তমানে কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগে কাঁচা মরিচের দাম ছিলো ৮০ টাকা।
তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। এজন্য পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’ কাওরান বাজারের ডিম বিক্রেতা সাহেদ আলী জানান, বর্তমানে ডিমের সরবরাহ বেশি। এজন্য ডিমের দাম কমেছে।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের একটি মুরগির দোকান।
তবে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ডিমের দাম বেশি দেখা গেছে। বিক্রেতা মুহিউল্লাহ জানান, ডিমের চাহিদা বেশি। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে, এজন্য দাম বেশি।
শেওড়াপাড়ার একটি দোকান।
শেওড়াপাড়া কাঁচা বাজারের বিক্রেতা আলীম উদ্দিন জানান, তেল, ডাল, আদা ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বাজার করতে এসেছিলেন গার্মেন্টসকর্মী মোছা. ফরিদা খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’