জাতীয় দল কিংবা আইপিএল- অধিনায়ক হিসেবে এখন পর্যন্ত কোনো শিরোপা জিততে পারেননি বিরাট কোহলি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অবশ্য টি-টোয়েন্টিতে তার শেষ সুযোগ আসন্ন বিশ্বকাপ। এছাড়া তিনি টেস্ট আর ওয়ানডে দলের নেতৃত্বেও আছেন। কিন্তু আইপিএলে সম্ভবত তার নেতৃত্ব এবারই শেষ হয়ে গেইল। গতকাল সোমবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের কাছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর হেরে যেতেই অধিনায়ক কোহলির বিদায় হয়ে যায়।
২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেট্টরির জায়গায় ব্যাঙ্গালোরের অধিনায়ক হন কোহলি। তারপর ১১ বছর ধরে তিনি বেঙ্গালুরুর অধিনায়কত্ব করেছেন। অধিনায়ক হিসেবে আইপিএলে ১৪০টি ম্যাচ খেলেছেন কোহলি। জিতেছেন ৬৬টি, হারতে হয়েছে ৭০টি ম্যাচে। পরিত্যক্ত হয়েছে চারটি ম্যাচ। তার নেতৃত্বে ব্যাঙ্গালোরের জয়ের শতকরা হার ৪৮.৫২ শতাংশ।
কোহলির নেতৃত্বে ব্যাঙ্গালোর চার বার প্লে-অফে উঠেছে। তবে তারা এক বারও ট্রফি জিততে পারেনি। এর মধ্যে সেরা বছর ২০১৬ সাল। সেবার ফাইনালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে মাত্র ৮ রানে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় কোহলির। ওই আসরে কোহলি করেন ৯৭৩ রান। এটাই এখনও পর্যন্ত একটি আইপিএলে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড। ২০১৬ সালে ৪টি সেঞ্চুরি করেছিলেন কোহলি। বাকি তিন বারের মধ্যে ২০১৫ সালে ব্যাঙ্গালোর তৃতীয় হয়। এই বছরের মতো গত বছরও তাদের এলিমিনেটরে বিদায় নিতে হয়েছিল।
এ ছাড়া ২০১৩ সালে বেঙ্গালুরু পঞ্চম, ২০১৪ সালে সপ্তম, ২০১৭ সালে অষ্টম, ২০১৮ সালে ষষ্ঠ এবং ২০১৯ সালে অষ্টম হয়। ব্যাঙ্গালোরকে একবারও ট্রফি দিতে না পারলেও আইপিএলে ব্যাটার কোহলির রেকর্ড যথেষ্ট ভালো। অধিনায়ক হিসেবে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড আছে তার। ১৪০টি ম্যাচে তিনি করেছেন ৪৪৮১ রান। তারপর আছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (২০৩ ম্যাচে ৪৪৫৬ রান), গৌতম গম্ভীর (১২৯ ম্যাচে ৩৫১৮ রান), রোহিত শর্মা (১২৯ ম্যাচে ৩৪০৬ রান), ডেভিড ওয়ার্নার (৬৯ ম্যাচে ২৮৪০ রান)।
সব মিলিয়ে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি রানের মালিকও কোহলিই। সোমবারের পর ২০৭ ম্যাচে তার রান ৬২৮৩। আইপিএলে ছয় হাজার রান আর কারোর নেই। অধিনায়ক হিসেবে সেঞ্চুরিতেও কোহলি সবার থেকে এগিয়ে। তার নামের পাশে আছে পাঁচ সেঞ্চুরি। মোট সেঞ্চুরিে কোহলি আছেন দ্বিতীয় স্থানে। তার সামনে শুধু ক্রিস গেইল। গেইলের ৬টি সেঞ্চুরি আছে। আইপিএলে মোট ছয় বার এক মৌসুমে পাঁচশর বেশি রান করেছেন কোহলি। আর কোনও ভারতীয় ব্যাটারের এই কৃতিত্ব নেই।
মজার ব্যাপার হলো, গতকাল সোমবার নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে কোহলি ৩৩ বলে ৩৯ রান করেন। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচেও তিনি ঠিক একই সংখ্যক রান করেছিলেন। ২০১১ সালে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে সেই ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ৩৪ বলে অপরাজিত ৩৯ রান। ভেট্টরি না খেলায় সেই ম্যাচে কোহলি দলকে নেতৃত্ব দেন। এসবই কোহলির ব্যক্তিগত অর্জন। ব্যাঙ্গালোরের অধিনায়ক হিসেবে তাকে শূন্য হাতেই বিদায় নিতে হয়েছে।