সময় বদলেছে। একটা সময় পিরিয়ডের সমস্যা নিয়ে নারীদের বা মেয়েদের থাকতো ভয়৷ তা নিয়ে কথা বলার সুযোগও তেমন কম ছিলো না। তবে এখন নিজের যত্নের দিকে মনোযোগী হওয়ার মতো সুযোগ কিছুটা হলেও মিলছে। প্রতি মাসেই প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের পিরিয়ডের সমস্যা হয়৷ হ্যাঁ, এই সময় অনেকেই কিছু কিছু সমস্যায় ভোগেন। তবে অনেকেই বিষয়টিকে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে দেয়না। তারা হয়তো স্বাভাবিকভাবেই দিন কাটিয়ে দেন। কিন্তু অনেকের জন্যেই তা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
সচরাচর পিরিয়ড হলে পেটে ব্যথা আর কোমড় ব্যথা হয়ে থাকে। এই ব্যথা কমানোর জন্যে প্রথম থেকেই কিছু না কিছু করার থাকে। এই সময় মানসিক ও শারীরিক নানাবিধ সমস্যায় ভুগতে পারে মেয়েরা। অনেকে ভালোমতো জানেও না কি কি সমস্যা হতে পারে।
এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি, পিরিয়ডের ঠিক আগেই মেয়েদের হরমোন লেভেলে কিছু পরিবর্তন আসতে শুরু করে৷ এতে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন নামক দুটো স্ত্রী হরমোন নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে মেজাজ বিগড়ে যাওয়া, রাগ ও উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এই সময় সেরোটোনিনের পরিমাণ কমতে শুরু করে। এতে খিটিমিটি ভাবটা বেড়ে যায়৷
যেসকল পরিবারে নারীরা প্রি মেন্সট্রুয়াল সিনড্রোমের শিকার, সেসকল পরিবারে এসকল সমস্যা খুবই স্বাভাবিক। বাড়িতে নির্যাতিত বা বিষণ্ণতার ঘটনা থাকলে এরকম হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছুই না। এখন আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার প্রি মেন্সট্রুয়াল সিনড্রোমের বা পি এম এস আছে? নিচের লক্ষণগুলো খেয়াল করুন-
- পিরিয়ডের সময় যত এগিয়ে আসে স্তনবৃন্তে ব্যথা শুরু হতে থাকে। এছাড়া হাত-পায়ে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘুমহীন অবস্থা, ক্লান্তি, মাথাব্যথা হলে বুঝবেন আপনার পি এম এস আছে।
- খুব সহজেই মেজাজ খারাপ করা, কান্নাকাটি করা, লিবিডো কমে যাওয়া পিএমএসের প্রধান লক্ষণ। তবে প্রথমবার দেখেই সিদ্ধান্ত নিবেন না। লাগাতার কয়েক মাস পিরিয়ডের নির্ধারিত দিনের ৬-১২ দিন আগে শরীরের লক্ষণগুলি দেখে সিদ্ধান্ত নিন। পিএমএস থেকে খুব সহজেই নিস্তার পাওয়া যায়। পিরিয়ড হলেই থেমে যায়। তবে সমস্যা জটিল হলে চিকিৎসকের কাছে যান।
এ তো গেলো লক্ষণের কথা। তাহলে নিস্তার কিভাবে মিলবে? খাদ্যতালিকায় ভিটামিন আর খনিজ পদার্থের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন৷ চেষ্টা করবেন ভিটামিন বি৬, ই, ডি-তে পরিপূর্ণ খাবার বেশি খেতে৷ এছাড়া ম্যাগনেসিয়ামে ভরপুর খাবারও খেতে হবে।
সবসময় চেষ্টা করবেন মুড ভালো রাখতে। কাজটা কঠিন। তবে যে কাজগুলো সচরাচর মুড ভালো রাখে সেগুলোর দিকে নজর দিন। ক্যাফেইন সমৃদ্ধ খাবার বা পানীয় এবং ভাজাপোড়া থেকে দূরে থাকুন। গ্রিন টি, আদা দেয়া লাল চা অবশ্য খেতে পারেন। চিনি আর লবণ যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো। শিমজাতীয় সবজি, মাছ, মাংস, ডিম, এগুলো নিয়ম করে খাওয়া উচিত৷