ফাইল ছবি
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে গত ৯ বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী গড় সমুদ্রের জলস্তর দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। রবিবার এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ডব্লিউএমও।
গ্লাসগো ক্লাইমেট চেঞ্জ কনফারেন্সে (কপ-২৬) ওয়ার্ল্ড লিডারস সামিটের প্রাক্কালে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০২ সালে মধ্যে বিশ্বজুড়ে গড় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি প্রতি বছর ২.১ মিমি ছিল। ২০১৩ থেকে ২০২১-এর মধ্যে সেই বৃদ্ধির হার হয়েছে ৪.৪ মিমি। এক দশকে বিশ্বে সমুদ্রের পানির স্তর বেড়েছে দুই গুণ। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
মূলত হিমবাহ এবং দুই মেরুতে বরফের স্তরে বরফের ভর হ্রাসের কারণেই দ্রুত হারে বেড়েছে সমুদ্রের জলস্তর। চলতি বছরের জুনে এবং জুলাইয়ের প্রথম দিকে ল্যাপ্টেভ সাগর এবং পূর্ব গ্রিনল্যান্ড সাগর অঞ্চলে সামুদ্রিক বরফ দ্রুত হারে হ্রাস পায়। ডব্লিউএমও জানিয়েছে, জুলাইয়ের প্রথমার্ধে আর্কটিক সমুদ্রে বরফের পরিমাণ রেকর্ড কম ছিল।
প্রভাব ভারতেও ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং খরার মতো দুর্যোগের কারণে গত বছর ভারতের ৮৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। এশিয়া ও তার আশেপাশে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা আরব সাগরের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক গড়ের থেকে তিনগুণ বেশি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ভারতের ৭,৫০০ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হতে পারে। বরফ-হিমবাহ গলে যাওয়া এবং জলের তাপীয় সম্প্রসারণের কারণে ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আরও ৪০ সেমি থেকে ১ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। প্রতি দশকে ৩.৭ সেন্টিমিটার জলস্তর বৃদ্ধিই ধীরে ধীরে সৈকতের ভিতরে জল ঢুকে আসার পক্ষে যথেষ্ট।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজির জলবায়ু বিজ্ঞানী রক্সি ম্যাথিউ কোল সতর্ক করেছেন, ভারতের উপকূলরেখা বরাবর চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলিই সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলাফল বুঝিয়ে দিচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়ের ৫০% বৃদ্ধি এবং অতিবৃষ্টিতে তিনগুণ বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি। তিনি বলেন, এটি ভবিষ্যতে আরও তীব্র হওয়ার অনুমান করা হচ্ছে। ২০২১ সালে মহাসাগরগুলি চরম উষ্ণতার রেকর্ড করেছে।
পশ্চিমবঙ্গে এর ফলে কী হবে?
এমনিতেই কৃষিজমি, বাসস্থান সংকটের প্রভাব ধীরে ধীরে প্রকট হচ্ছে। নিম্ন গাঙ্গেয় অববাহিকা, দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে খুব বেশি উঁচু নয়। ফলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবন শুরু হলে কী হতে পারে, তা বলাই বাহুল্য। এছাড়া সমুদ্রের তাপমাত্রা আবহাওয়াকে বিপুলভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে সময়ের সঙ্গে প্রবল ঘুর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টির ঘটনা বৃদ্ধি পাবে। প্রভাবিত হবে কৃষি উত্পাদন। ডি-এফবি