২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি বিশ্বনেতাদের

জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বনেতারা। ছবি: সংগৃহীত

২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেন শতাধিক বিশ্বনেতা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু সম্মেলনে এটিই প্রথম বড় ধরনের সমঝোতা। আমাজন বনের বড় অংশ কেটে ফেলা ব্রাজিলও আছে প্রতিশ্রুতি দানকারী এসব দেশের মধ্যে। খবর বিবিসির।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) এ নিয়ে চুক্তিসই হবে। বন উজাড় বন্ধে সরকারি-বেসরকারি মিলে বরাদ্দ রয়েছে ১ হাজার ৯২০ কোটি ডলারের তহবিল। এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। তবে ২০১৪ সালে ধীরগতিতে বন উজাড় নিয়ে যে চুক্তি হয়েছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে বলেও স্মরণ করিয়ে দিতে ভুলেননি তারা।

বন উজাড় বন্ধের চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে বলে জানিয়েছে কানাডা, ব্রাজিল, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলে বিশ্বের ৮৫ শতাংশ বন রক্ষা করা সম্ভব হবে। ক্ষতিগ্রস্ত জমি পুনরুদ্ধার, দাবানল নিয়ন্ত্রণ ও আদিবাসী সম্প্রদায়কে সহযোগিতা করার জন্য উন্নত দেশগুলো তহবিল বরাদ্দ পাবে।

ছবি: বিবিসি

২৮টি দেশের সরকার খাদ্য ও অন্যান্য কৃষিপণ্য যেমন পামতেল, সয়া ও কোকোর মতো বৈশ্বিক বাণিজ্যের বিষয়ে এবং বন উজাড় বন্ধ করতে একমত পোষণ করেছে। এ ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পশুচারণ ও শস্য উৎপাদনের জন্য গাছ কেটে উজাড় করে।

বিশ্বের বড় ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান বন উজাড়ের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগ বন্ধের জন্য একমত হয়েছে। কঙ্গোর বৃষ্টিপ্রধান ক্রান্তীয় বন রক্ষায় ১১০ কোটি ডলারের তহবিল বরাদ্দ করা হবে।

জলবায়ু সম্মেলনের আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্য। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বনাঞ্চল রক্ষায় ঐতিহাসিক চুক্তির আহ্বান জানান।

শতাধিক বিশ্বনেতা ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে এটিই প্রথম বড় সমঝোতা। ছবি: সংগৃহীত

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জলবায়ু ও বনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সিমন লিউস বলেন, বিভিন্ন দেশে বন উজাড় বন্ধে রাজনৈতিক সমঝোতা একটি বড় সুসংবাদ।

তিনি অবশ্য অভিযোগের সুরে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোতে মাংসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। নতুন এই সমঝোতা অনুসারে সেই চাহিদার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা নেই।

চাথাম হাউস সাসটেনেবিলিটি অ্যাক্সিলেটরের নির্বাহী পরিচালক অ্যানা ইয়াং বলেন, এই সমঝোতায় প্রচুর অর্থের জোগান রয়েছে। তবে চুক্তির কার্যকারিতা দেখার জন্য আরও সময় লাগবে।

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত দুই সপ্তাহব্যাপী কপ-২৬ শীর্ষ সম্মেলন বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY