গবেষণা : সুইডেন অন্যান্য দেশে কভিড রপ্তানি করেছে

সুইডেনের এক সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, সুইডেনের করোনা প্রতিরোধের কৌশলপদ্ধতি দেশটি থেকে অন্যান্য দেশে সংক্রমণ বিস্তারে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে। উপসালার একজন প্রখ্যাত গবেষক জন পেটারসন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, চলমান করোনা মহামারির প্রথম বছরে সুইডেনের ভূমিকা নর্ডিক প্রতিবেশী দেশগুলোতে মূলত সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের নেট রপ্তানিকারকের ভূমিকায় নিয়োজিত ছিল। উপসালা ইউনিভার্সিটি, নরওয়েজিয়ান ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ এবং অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দ্বারা পরিচালিত এই গবেষণাটি ইউরোপীয় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার জার্নাল ‘ইউরোসার্ভিল্যান্সে’ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় ৭১ হাজারেরও বেশি রোগীর নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলে জার্নালে জানা যায়।

যেহেতু সার্স-কোভ-২ ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়, সেহেতু নমুনাগুলো কখন, কোথায় এবং কিভাবে নেওয়া হয়েছিল এবং ভাইরাসের জিনোমের বিস্তারিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মহামারির প্রথম বছরে নর্ডিক দেশগুলোতে কিভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছিল, তার জন্য গবেষকরা এক ধরনের ‘সময়-ক্যালিব্রেটেড জিনেটিক ফ্যামিলি ট্রি’ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান জন পেটারসন।

সমীক্ষায় দেখা যায়, সুইডেনের জনসংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাইরাসের ‘জিনেটিক ফ্যামিলি ট্রি’-তে ছিল সর্বাধিক বিস্তারিত ‘শাখা’– যা উভয় ক্ষেত্রেই ছিল ‘সম্পূর্ণ সংখ্যা’ (absolute number)। এ থেকে প্রতীয়মান হয় এবং বিশ্বাস করা হয় যে সুইডেনে ‘শিথিলতা এবং স্বল্প নিষেধাজ্ঞামূলক কভিড কৌশলের’ কারণেই প্রতিবেশী দেশগুলোতে কভিড-১৯ ছড়াতে সুইডেন বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। এ ছাড়া সমীক্ষায় আরো দেখা যায় যে সুইডেনে উদ্ভূত ‘সংক্রমণ-চেইন’ কয়েক শ ক্ষেত্রে নর্ডিক দেশগুলো ছাড়াও বিশ্বের অন্য দেশগুলোতেও বিস্তার লাভ করেছে।

ফিনল্যান্ডে কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সুইডেন থেকে এই জাতীয় ভাইরাস রপ্তানির বেশির ভাগ ঘটনা পেয়েছে। যেসব ফিনিশ ফিনল্যান্ডে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েনি, তারাই মূলত সুইডেন থেকে ফিনল্যান্ডে ফেরার সময় কভিড সংক্রমণ সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল। এর বিপরীতে সমীক্ষায় আরো দেখা যায়, ফিনল্যান্ড থেকে সুইডেনে আসা প্রায় কোনো ভাইরাসেরই সংক্রমণ হতে দেখা যায়নি বলে জানান প্রফেসর জন পেটারসন।

LEAVE A REPLY