ধর্ষণ : ওষুধ দিয়ে যৌন ক্ষমতাহীন করার আইন করল পাকিস্তান

পাকিস্তানি আইনপ্রণেতারা বেশ কয়েকটি আলোচিত ধর্ষণ এবং শিশু যৌন নির্যাতনের ঘটনার পর ক্রমবর্ধমান জনদাবির মুখে ‘সিরিয়াল ধর্ষক’দের জন্য ‘রাসায়নিক খোজাকরণ’ (ওষুধের মাধ্যমে যৌন সক্ষমতা নিষ্ক্রিয়করণ) আইন প্রণয়ন করেছে।

গতকাল ১৭ নভেম্বর সংসদের একটি যৌথ অধিবেশনে পাস করা একটি বিলে বলা হয়, সরকারকে অবশ্যই ধর্ষণের বিচার ত্বরান্বিত করতে এবং যৌন নির্যাতনের মামলাগুলো ‘দ্রুতগতিতে; চার মাসের মধ্যে” নিষ্পত্তি করতে বিশেষ আদালত গঠন করতে হবে। প্রস্তাবিত আইনটি স্বাক্ষরের জন্য রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভির কাছে পাঠানো হবে।

রাসায়নিক খোজাকরণ হলো ওষুধ বা হরমোন চিকিৎসা যা সাময়িকভাবে যৌন সক্ষমতাকে দমন করে।

পাকিস্তানের একটি প্রধান মহাসড়কে সন্তানদের সামনে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ও এ ঘটনায় দেশব্যাপী বিক্ষোভের সূত্র ধরে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘোষণা করেন, তাঁর প্রশাসন একটি খসড়া বিল প্রস্তুত করছে যা যৌন অপরাধীদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অন্তর্ভুক্ত করবে। এ বছরের শুরুর দিকে ওই মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

করাচিভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ওয়ার এগেইনস্ট রেপ জানাচ্ছে, যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের ক্ষেত্রে ৩ শতাংশেরও কম দোষী সাব্যস্ত হয়।

অবশ্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, পাকিস্তানের পুলিশ ও বিচারব্যবস্থায় সংস্কার এবং সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান বৃদ্ধি যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং প্রতিরোধের সর্বোত্তম পন্থা।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সম্মতি ছাড়াই রাসায়নিক খোজাকরণকে একটি ‘নিষ্ঠুর এবং অমানবিক’ শাস্তি বলে অভিহিত করে। লন্ডনভিত্তিক এই মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা এক বিবৃতিতে বলে, পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের উচিত সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ কাজের দিকে মনোনিবেশ করা যা যৌন সহিংসতার মূল কারণগুলোকে মোকাবেলা করবে এবং বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের তাদের প্রাপ্য ন্যায়বিচার দেবে।

রাশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র এবং দক্ষিণ কোরিয়াসহ কিছু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই যৌন অপরাধের জন্য ‘রাসায়নিক খোজাকরণ’ একটি আইনি শাস্তি।
সূত্র : গান্ধারা 

LEAVE A REPLY