বাংলাদেশের উইকেট এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের উইকেট এক নয়। তাই বিশ্বকাপে ভরাডুবির পরও ঘরের মাঠে আজ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টি-২০তে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ।
আমিরাতে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম করা শক্তিশালী দল নিয়েই ঢাকায় পা রেখেছে পাকিস্তান। অন্যদিকে বাংলাদেশ দলে রীতিমতো বিপ্লব ঘটে গেছে। দলে এসেছে ছয় ছয়টি পরিবর্তন। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ছাড়া বলতে গেলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারই নেই! স্কোয়াডের চার ক্রিকেটারের অভিষেকই হয়নি। এমন একটি দলটি নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই কতটা জমিয়ে তুলতে পারবে বাংলাদেশ? সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ছাড়া এ যেন নতুন এক দল! বাদ দেওয়া হয়েছে দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকারকেও।
বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর স্কোয়াডে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন একই দল নিয়েই পাকিস্তানকে রুখে দেওয়ার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ টিমের জন্য শুরুটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই সিরিজে ভালো শুরু করব।’
সদ্য সমাপ্ত টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে কিছুদিন আগেই সিরিজে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তাই স্বাগতিকদের মোটেও হালকা করে দেখছেন না পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম।
তিনি বলেন, ‘এটা তাদের (বাংলাদেশ দল) হোম সিরিজ। কাজেই ওদেরকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। কয়েকজন ক্রিকেটার নেই, তবে যারা আছে, তারাও কম নয়। বিপিএল খেলে ওরা সবাই। ওদেরকে সহজভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।’
বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন ওপেনাররা। পাওয়ার প্লেতে সুবিধা করতে না পারায় বড় স্কোর হয়নি। এমনকি স্লগ ওভারে দ্রুত রান করার মতো পাওয়ার হিটারও বাংলাদেশ দলে নেই। এজন্যই দলে পরিবর্তন আনা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কি সমস্যার সমাধান হবে? অবশ্য বাংলাদেশের যে উইকেট তাতে পাওয়ার হিটার না থাকলেও সমস্যার হওয়ার কথা নয়। কারণ অধিকাংশ ম্যাচ হয় লো স্কোরিং! সেটা অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজেই দেখা গেছে।
এদিকে, ওই দুই সিরিজের ফল দেখে নিজেদের সেভাবে প্রস্তুত করেছেন বাবর আজমরা। গতকাল পরিকল্পনা সম্পর্কে পাকিস্তানের অধিনায়ক বলেন, ‘পরিকল্পনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতোই থাকবে। অনুশীলন যতটা করে বুঝেছি, আমিরাতের মতো রান এখানে হবে না। এখানে যেটা করতে হবে, হাতে উইকেট রাখতে হবে। তাহলে কাজ সহজ হবে পরে। বিশ্বকাপেও যেমন আমরা উইকেট হাতে রেখে পরে শেষ ৭-৮ ওভারে যতটা সম্ভব বেশি রান করতে চেয়েছি, এই পরিকল্পনাই থাকবে এখানে। উইকেট যতটা হাতে রাখব, ততটা কার্যকর হবে।’
পাকিস্তানের ওপেনিং জুটি ভয়ংকর। বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানকে আউট করাই কঠিন। তবে এই দুজনকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে টাইগার বোলারদের। আর বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য হুমকি শাহিন শাহ আফ্রিদি। নতুন বলে তার বিরুদ্ধে টিকে থাকা খুবই কঠিন।
পাকিস্তানি বোলারকে নিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘শাহীন শাহ ওদের অধিকাংশ ম্যাচেই দলে বড় ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে নতুন বলে। ওই বিষয়টা আমাদের মাথায় আছে, আমরা এনালাইসিস করেছি।’
তবে এই সিরিজে বাংলাদেশ দলের আসল বাধা হচ্ছে ‘মনস্তাত্ত্বিক’। বিশ্বকাপে ভরাডুবির ট্রমা মাথায় থেকে মুছে ফেলে ক্যাপ্টেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের তারুণ্যে উদ্দীপ্ত এই ‘বাংলাদেশ দল’ কতটা ভালো খেলতে পারে বাবর আজমের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে-সেটা একটা প্রশ্ন। তবে এটাও তো ঠিক যে, উজ্জীবিত তারুণ্যের সামনে কোনো বাধাই বাধা নয়! এখন দেখা যাক কি হয়!