মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে খেললে ওয়ার্নের হাজার উইকেট পাওয়া হতো না!

লেগ স্পিনার ইতিহাসে কিংবদন্তি হয়ে আছেন অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন। টেস্টে ৭০৮ উইকেটের পাশাপাশি ওয়ানডেতে নিয়েছেন ২৯৩ উইকেট। মোট আন্তর্জাতিক উইকেট সংখ্যা ১০০১টি। এর মাঝে ২৪০টি আন্তর্জাতিক উইকেট বাঁহাতি ব্যাটারদের! আবার পড়ে দেখুন, লেগ স্পিনার হিসবে ২৪০ বার বাঁহাতি ব্যাটারদের আউট করেছেন ওয়ার্ন। এই প্রসঙ্গ টানার কারণ, বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের একটা সিদ্ধান্ত।

গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবে নেওয়া হয় আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে। অথচ, তাকে ১৯ ওভার পর্যন্ত বলই দেওয়া হয়নি! শেষ ওভারে পাকিস্তানের জিততে যখন ২ রান প্রয়োজন, তখন বোলিংয়ে আনা হয় বিপ্লবকে। এর আগে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ নিজে তিন ওভার বল করেছেন। শেষ ওভারে নিজে বল না করে আমিনুলকে আনার কোনো ব্যখ্যা তিনি দিতে পারেননি।

তবে একটা ব্যখ্যা তিনি দিয়েছেন- আমিনুলকে কেন ১৯ ওভার পর্যন্ত বল দেওয়া হয়নি, সেটার। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক বলেন, ‘পরিকল্পনা ছিল বোলিং করানোর। পরে যেহেতু দুটি বাঁহাতি ব্যাটার ছিল, তাই আমাকে বোলিং করতে হয়।’ তখন ক্রিজে ছিলেন  দুই বাঁহাতি ব্যাটার ফখর জামান ও খুশদিল শাহ। রীতিমতো হাস্যকর ব্যাখ্যা। এটা ঠিক যে, বাঁহাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে লেগ স্পিনার কিংবা বাঁহাতি অফ স্পিনাররা স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না। তাই বলে তাদের বোলিং দেওয়াই যাবে না, এমন কোনো কথা নেই।

এই প্রসঙ্গেই চলে আসে শেন ওয়ার্নের কথা। মাহমুদউল্লাহ যদি শেন ওয়ার্নের অধিনায়ক হতেন, তাহলে হয়তো ওয়ার্নকে ২৪০ উইকেট কম নিয়েই ক্যারিয়ার শেষ করতে হতো। কারণ, বাঁহাতি ব্যাটারের বিপক্ষে ওয়ার্নকে বোলিং দিতেন না মাহমুদউল্লাহ। তাকে স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবে একাদশে নিতেন, কিন্তু বোলিং করাতেন না! কী হাস্যকর তাই না? এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচেও বাঁহাতি ব্যাটারের অজুহাতে সাকিবকে বোলিংয়ে আনেননি মাহমুদউল্লাহ।

ক্রিকেটে ব্যাটিং বা বোলিংয়ের ক্ষেত্রে ডানহাতি-বামহাতি কম্বিনেশনের একটা ব্যাপার থাকে। তাই বলে সেটাই চিরন্তন সত্য নয়। তেমনটা হলে তামিম-ইমরুল বাংলাদেশের সেরা ওপেনিং জুটি হতো না। শচীন টেন্ডুলকার আর রাহুল দ্রাবিড়ের জুটিও ক্রিকেট ইতিহাসে অমর হয়ে থাকত না। অনিল কুম্বলে কিংবা আব্দুল কাদিররা ক্রিকেট ইতিহাসে কিংবদন্তির আসন নিতে পারতেন না। বাবর-রিজওয়ান কিংবা রোহিত-লোকেশরা দলে একসঙ্গে সুযোগই পেতেন না! ওপেন করা তো দূরের কথা!

মাহমুদউল্লাহরা আর কবে মুখস্তবিদ্যা থেকে বের হবেন? কবে একটু মাথা খাটিয়ে নেতৃত্ব দেবেন?

LEAVE A REPLY