চট্টগ্রামে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ভক্ত, সামলালেন বাঁধন

চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন প্রেক্ষাগৃহে মাত্র প্রদর্শনী শেষ হয়েছে। আলো জ্বলে উঠেছে। একদিক থেকে হু হু করে কান্না ভেসে এলো। বাঁধভাঙ্গা কান্না। প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন আজমেরি হক বাঁধন। গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন। এক মুহূর্ত, দুই মুহূর্ত… না, তার পরেও যেন সেই কান্না থামে না। বাঁধন তার হাত ধরে বসালেন।

আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশের ১১টি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে। চট্টগ্রামের দর্শকদের সঙ্গে প্রদর্শনী দেখতে বাঁধন  উড়াল দিয়েছিলেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই শেষ হয়েছিল প্রদর্শনী, কিন্তু আকস্মিকভাবে এক ভক্তের কান্না সবাইকে স্তব্ধ করে দেয়।

ওই ভক্ত কোনোক্রমে বলে উঠেছিলেন, বাঁধন তাঁর সামনে এটা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না।

এই অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে আজমেরি হক বাঁধন কালের কণ্ঠকে বলেন, আসলে এমন অভিজ্ঞতা প্রায়ই ঘটছে। সেদিন চট্টগ্রামের সুগন্ধা সিনেমা হলে গিয়েছি। এক মেয়ে আমাকে দেখে থমকে আছে, আমার জন্য চিঠি নিয়ে আসছে। বলছে, চিঠির কথা যেন কাউকে না বলি। মেয়েটা বারবার আমাকে স্পর্শ করে দেখছিল। 

আরেকটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে বলেন, আমার বোনের ছেলের বউ, সে এসেছে সিনেমা দেখতে। সিনেমা শেষে সেও আমাকে জড়িয়ে ধরল। ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিল না সে কী বলতে চায়। আসলে রেহানা মরিয়ম নূরে অনেকগুলো চরিত্র, একেকটি চরিত্র একেকজনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।

এই চলচ্চিত্র নিয়ে বলতে গিয়ে বাঁধন বলেন, ‘চট্টগ্রামের সুগন্ধা হল একটি পুরনো হল। চলচ্চিত্রের সঙ্গে দীর্ঘ ইতিহাস এই হলের। হলের মালিক বলছিলেন, গত পাঁচ বছরে এমন ব্যবসা করেনি কোনো ছবি। স্টার সিনেপ্লেক্সের রুহেল ভাই বলছিলেন, ডিফারেন্ট টাইপ মানুষ দল বেঁধে আসছেন ছবি দেখতে। আসলে চরিত্রগুলো মানুষকে স্পর্শ করছে।’

ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথমবার বাংলাদেশ থেকে অফিশিয়াল সিলেকশন পেয়ে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ এখন ইতিহাসের অংশ। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত নামজাদা এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডস (অ্যাপসা) দ্বিতীয় সেরা ছবি হয়েছে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের নির্মাণটি এবং সেরা অভিনেত্রীর স্বীকৃতি পান আজমেরী হক বাঁধন। এ ছাড়া হংকং এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভালে জিতেছে নিউ ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ড।

১ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট ব্যাপ্তির ছবিটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন আজমেরি হক বাঁধন। এ ছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে আছেন সাবেরী আলম, আফিয়া জাহিন জায়মা, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, কাজী সামি হাসান, ইয়াছির আল হক, জোপারি লুই, ফারজানা বীথি, জাহেদ চৌধুরী মিঠু, খুশিয়ারা খুশবু অনি ও অভ্রদিত চৌধুরী।

প্রথম সপ্তাহে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও বগুড়ার ১২টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। চলতি সপ্তাহে পাবনার দর্শকরাও এ ছবি দেখার সুযোগ পাচ্ছে। দেখুন তালিকা—

ঢাকা : স্টার সিনেপ্লেক্স বসুন্ধরা শপিং মল (দুপুর ১টা, দুপুর ৩.১০, বিকেল ৫.৩০, সন্ধ্যা ৭.৪৫), এসকেএস টাওয়ার (দুপুর ২.৪৫, রাত ৮টা), সনি স্কয়ার (দুপুর ১২.৩০, বিকেল ৫.২০), সীমান্ত সম্ভার (দুপুর ১২.১০, বিকেল ৫.১৫); যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমাস (সকাল ১১.৫০, দুপুর ২.২০, বিকেল ৪.৪০, সন্ধ্যা ৭টা); শ্যামলী সিনেমা হল (দুপুর ১২.৪০, বিকেল ৩.১৫, সন্ধ্যা ৬.১৫, রাত ৮টা)।

ঢাকার বাইরে : নারায়ণগঞ্জের সিনেস্কোপ (সকাল ১১টা, দুপুর ২.৩০, বিকেল ৫টা, সন্ধ্যা ৭.৩০); চট্টগ্রামের সিলভারস্ক্রিন (শুক্রবার বিকেল ৩টা, বিকেল ৫.১৫; শনি, সোম ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭.৪৫; রবিবার ও মঙ্গলবার দুপুর ২.৩০), সুগন্ধা সিনেমা হল (দুপুর ১২.৩০, বিকেল ৩.৩০, সন্ধ্যা ৬.৩০); বগুড়ার মধুবন (শুক্রবার দুপুর ৩.১৫, সন্ধ্যা ৬.১৫, রাত ৯.১৫ এবং অন্য দিন দুপুর ১২টা, বিকেল ৩টা, সন্ধ্যা ৬টা, রাত ৯টা); পাবনার রূপকথা (দুপুর ১২.৩০, বিকেল ৩.৩০, সন্ধ্যা ৬.৩০, রাত ৯.৩০)।

LEAVE A REPLY