রিটার্ন জমা দিচ্ছেন এক করদাতা। ছবি : কালের কণ্ঠ অ-অঅ+
করোনার কারণে গতবারের মতো এ বছরও আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়নি। মেলার পরিবর্তে ৩১টি কর অঞ্চলে উৎসবমুখর পরিবেশে রিটার্ন জমা নেওয়া হচ্ছে। ৩০ নভেম্বর আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ সময়। তবে মাসের ২২ দিন চলে গেলেও এখনো তেমন ভিড় নেই রাজধানীর কর অঞ্চলগুলোতে। এই সময়ে কর অঞ্চলগুলোতে করদাতাদের যেভাবে ভিড় থাকার কথা, সে তুলনায় ভিড় অনেক কম।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, এবার করদাতাদের বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হবে না। তবে কেউ নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন জমা দিতে না পারলে আইনানুযায়ী সময় চেয়ে আবেদন করতে পারবেন।
এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (জরিপ, কর ফাঁকি ও আইটিপি রেজি., কর-১৫) দীপক কুমার পাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কী পরিমাণ আয়কর রিটার্ন জমা পড়ছে, সেটি কর অঞ্চল থেকে এক সপ্তাহ পর পর আমাদের এখানে তথ্য পাঠানো হয়। গত ২১ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের সব কর অঞ্চল মিলে চার লাখ ৩০ হাজার রিটার্ন জমা পড়েছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রিটার্ন দাখিলের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে গতবারের মতো এবারও কর অঞ্চলগুলোতে আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিকে উপচে পড়া ভিড় থাকবে। করদাতাদের বুথের সামনেই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে তখন। তাই আগে আগেই করদাতাদের রিটার্ন জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। গতকাল সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার কর অঞ্চল-৬-এ দেখা যায়, মাসের শেষ দিকের তুলনায় রিটার্ন জমা দিতে করদাতাদের উপস্থিতি খুবই কম দেখা গেছে। এ বিষয়ে কর অঞ্চল-৬-এর কর কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদ হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আশা করি, সবাই রিটার্ন জমা দেবেন। তবে শেষ দিকে এসে ধাক্কাধাক্কি করে দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘৩০ নভেম্বর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন। এ বছর রিটার্ন জমার সময় বাড়ানো হবে না। তাই এনবিআরের চেয়ারম্যান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করদাতাদের রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তবে করদাতার সমস্যা থাকলে সময় বৃদ্ধির আবেদন করতে পারবেন। প্রতি মাসে ২ শতাংশ জরিমানাসহ জমা দিতে হবে।’
কর অঞ্চল-৩-এ গিয়েও দেখা যায় বুথের সামনে ভিড় নেই। কাউকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে না। এই কর অঞ্চলে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা পড়েছে ১৭ হাজার ১৪৬টি।
সেবা নিতে আসা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মো. সোহেল রানা বলেন, ‘এখন তেমনভাবে কোনো ভিড় নেই, মূলত মাসের শেষ দিকে ভিড় হয়। তাই আগেভাগে রিটার্ন জমা দিয়ে দিলাম। সব মিলিয়ে এবার কর অঞ্চলে জমা দিয়ে বুঝলাম মেলার চেয়ে এখানেই ভালো। এখানে মেলার চেয়ে কম সেবা দেওয়া হচ্ছে না।’
কর অঞ্চল-৪-এর উপকর কমিশনার শাহ মোহাম্মদ ফজলে এলাহী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘২১ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা পড়েছে ৪৯ হাজার ৫৭৫টি। এই কর অঞ্চলে গত বছর ৬০ হাজার করদাতা আয়কর জমা দেয়। এ বছর প্রায় ৭০ হাজারের বেশি রিটার্ন জমা দিতে পারে।’ কর অঞ্চল-১৩-এর কর কর্মকর্তা ওমর ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘২১ নভেম্বর পর্যন্ত এখানে রিটার্ন জমা পড়েছে প্রায় ১৪ হাজার ৪৮৯টি। রিটার্ন জমা দিতে প্রতিবার ভিড় হয় মাসের শেষ দিকে। তাই এবার আমাদের রিটার্ন কালেকশন বুথ তিনটি থেকে বাড়িয়ে ছয়টি করেছি। মূলত শেষ দিকের ভিড় সামাল দেওয়ার জন্যই এই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অনলাইনে এই কর অঞ্চলে এখন পর্যন্ত চার শর বেশি রিটার্ন জমা পড়েছে।’