মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) তাগিদ দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সেটি গত এক দশকেও আলোর মুখ দেখেনি।
আজ শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিএমসিসিআই) সভাপতি রাকিব মোহাম্মদ ফখরুল এসব কথা বলেন। বিএমএসসিসিআইয়ের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএমসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হবে। এ সময় বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারে কোটামুক্ত ও শুল্কমুক্ত সুবিধা হারাবে। এই প্রেক্ষাপটে টেকসই রপ্তানি প্রবৃদ্ধির জন্য বাণিজ্যমন্ত্রণালয় এবং সরকারের নীতি নির্ধারণী প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করছে বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিএমসিসিআই) সহ-সভাপতি আনোয়ার শহিদ ও মাহবুবুল আলম। এ সময় সংগঠনটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ১৩ ডিসেম্বর বিএমসিসিআইয়ের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে সম্মতি জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
ব্র্যান্ডিংয়ের অভাবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের পণ্য পিছিয়ে পড়ছে উল্লেখ করে বিএমসিসিআই সভাপতি বলেন, মালয়েশিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। তবে সেগুলোর ক্রেতা মালেয়শিয়ার প্রবাসী বাঙালি। মুলধারার জনগণের বাংলাদেশের পণ্যের কোনো ধারনা নেই। কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং করা গেলে সেখানের বড় একটি বাজার বাংলাদেশ ধরতে পারবে বলে আমরা মনে করি।
বিএমসিসিআই ২০ বছর পূর্তি উদযাপন কমিটির সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, মালয়েশিয়ার বাজারে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পণ্যের ৮৫ শতাংশই গার্মেন্টস পণ্য। মাত্র ১৫ শতাংশ অন্যান্য পণ্য। যেহেতু গার্মেন্টস পণ্যে আগে থেকেই বাজার দখল করে রেখেছে চীন, তাই সেখান থেকে আমাদের বেশি লাভ করার সুযোগ নেই। আমরা সহজে চীনকে টক্কর দিতে পারব না। সেজন্য আমাদের অন্যান্য পণ্যের বাজার বড় করতে হবে। যেমন আমাদের দেশে এখন অনেক ধরনের আইসিটি পণ্য তৈরি হয় এগুলো রপ্তানি করা যায়। এ ছাড়া লেদার পণ্য, হ্যান্ডিক্রাফটসহ অনেক পণ্েযর চাহিদা রয়েছে দেশটিতে আমরা এদিকে মনোযোগ দিলে দেশটিতে আমাদের রপ্তানি আয় বাড়াবে।
এই উদযাপনের উদ্দেশ্য হিসেবে বিএমসিসিআই জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যবসা এবং বিএমসিসিআই সদস্যদের জন্য ব্যবসার সুযোগ সহজতর করা এবং প্রচার করা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যবসা এবং বিএমসিসিআই সদস্যদের মাঝে নেটওয়ার্কিং, পরামর্শদান এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি ফোরাম প্রদান করা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যবসার মালিক এবং বিএমসিসিআই সদস্যদের ঐক্য বজায় রাখা, বাংলাদেশ এবং মালেয়শিয়া করপোরেশন এবং বিএমসিসিআই সদস্যদের পণ্য ও পরিষেবার প্রচার করা যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্যাসিফিকের অগ্রগতিতে সহায়তা করা।