গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা খুব সাধারন একটি সমস্যা। সাইনাসের সমস্যা, ঘুমের ব্যাঘাত, ডিহাইড্রেশন মাথা ব্যথার সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথাতে কোন ক্ষতি হয় না। তবে গর্ভাবস্থার প্রথম থেকে শুরু করে দ্বিতীয় ধাপ পর্যন্ত যদি মাথা ব্যথা চলতে থাকে তবে তা প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার কারণ হতে পারে। মেডিক্যাল ভাষ্যমতে এটি একটি ভয়াবহ পর্যায়।
প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার কারণ কি?
প্রিক্ল্যাম্পসিয়া হলো গর্ভকালীন সমস্যা যার ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়, অনেক ক্ষেত্রে অঙ্গের ক্ষতির মতো মারাত্মক ঘটনাও ঘটতে পারে। প্রেগন্যান্সির ২০ সপ্তাহ পর এ সমস্যা শুরু হতে পারে।
সময়মত চিকিৎসা করা না হলে এ থেকে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার সমস্যা যদি আগেভাগেই হয় তবে সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা হলো বাচ্চার প্রসব করানো। কারণ বাচ্চা পরিপূর্ন রুপ ধারণ করতে সময়ের প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায় কেন মাথাব্যথা হয়?
গর্ভাবস্থায় নয় সপ্তাহের আশেপাশে মাথা ব্যথা হতে পারে। এসময় রক্তচাপ ও হরমোন বৃদ্ধি পায়। তবে গর্ভাবস্থায় যেকোন সময় মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। মাথা ব্যথা এমন হবে যা আগে আপনি কখনো অনুভব করেননি। যেকোন একপাশে মাথা ব্যথা হতে পারে আবার দুপাশেও হতে পারে।
সাইনাস প্রেসার: গর্ভাবস্থায় রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে সাইনাসের ওপর চাপ বাড়তে পারে, এ থেকে মাথা ব্যথা হয় ।
অপর্যাপ্ত ঘুম: ঘুমের ঘাটতি থাকলে মাথা ব্যথা হতে পারে।
ডিহাইড্রেশন: গর্ভাবস্থায় সবাইকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে বলা হয়। এতে করে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি কমে।
ক্ষুধা: গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত খাওয়া দাওয়া না করলে ব্লাড সুগার কমে যায়। এ থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে।
হরমোন: হরমোনের ওঠানামার কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে।
দুঃশ্চিন্তা: শরীরের ওজন বৃদ্ধি ও শারীরিক পরিবর্তনের কারণে সব সময় মাথায় চিন্তা ঘুরতে থাকে আর এ থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে।
ক্যাফেইন: যাদের ক্যাফেইন খাওয়ার অভ্যাস তারা যদি গর্ভাবস্থায় হুট করে ক্যাফেইন গ্রহণ বাদ দিয়ে দেয়। এ থেকে মাথা ব্যথা, ক্লান্তি ও অবসাদ হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ: প্রিক্ল্যাম্পসিয়া সম্পর্কিত উচ্চ রক্তচাপের কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভাধারণের ২২ সপ্তাহ পর এ সমস্যা দেখা দেয়। হুট করে মাথা ব্যথা শুরু হয় যা কখনো হয়নি তাইলে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিন দ্রুত।
গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়: প্রথমত মাথা ব্যথার কারণ খোঁজার চেষ্টা করুন। এর জন্য কিছু সময় লাগলেও লাগতে পারে।
পানি পান: যখনই মাথা ব্যথা হবে এক গ্লাস পানি পান করে নিন। এতে আপনার যদি ডিহাইড্রেশনের কারণে মাথা ব্যথা হয়ে থাকে তবে তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
বিশ্রাম নেওয়া: যখন বিশ্রাম নেবেন ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
গরম ও ঠাণ্ডা: গরম ও ঠাণ্ডা দুটোই আপনার মাথা ও ঘাড়ের পেশী শিথিল করতে পারে। এটি প্রয়োগ করে দেখুন।
মাথার ত্বক ও ঘাড়ের ম্যাসেজ: মাথার ত্বক ও ঘাড়ের ম্যাসেজ মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে। সেই সাথে রক্ত চলাচলও স্বাভাবিক থাকে।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন:
গর্ভাবস্থার তৃতীয় ভাগে প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার সম্ভাবনা বাড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
সূত্র: দ্যা টাইমস অব ইন্ডিয়া