ভুয়া সনদের ডাক্তারকে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট

চীনের একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া সনদ দিয়ে এমবিবিএস চিকিৎসক হিসেবে নিবন্ধন নেওয়ার মামলায় ভোলার দৌলতখানের মো. মাহমুদুল হাসানকে জামিন না দিয়ে পুলিশে দিয়েছেন হাইকোর্ট। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট অধস্তন আদালতে হাজির করাতে বলা হয়েছে।  

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন। আদালতে মো. মাহমুদুল হাসানের আগাম জামিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহিনুর আলম। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এবিএম বায়েজীদ। রাস্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। 

চীনের একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ভুয়া সনদে ১২ জনকে এমবিবিএস চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এর আগে, গত বছর  ২ ডিসেম্বর  দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ  কমিশনের উপ-পরিচালক সেলিনা আখতার মনি বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মো. জাহিদুল হক বসুনিয়া এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন ছাড়াও চিকিৎসক নিবন্ধন পাওয়া ১২ জনকে আসামি করা হয়।

তারা হলেন : কুমিল্লার বরুড়ার মো. ইমান আলী ও মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সুদেব সেন, টাঙ্গাইলের কালিহাতীর তন্ময় আহমেদ, ভোলার দৌলতখানের মো. মাহমুদুল হাসান, চাঁদপুরের মতলবের মো. মোক্তার হোসাইন, ঢাকার সাভারের মো. আসাদ উল্লাহ, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মো. কাউসার, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রহমত আলী, বাগেরহাট সদরের শেখ আতিয়ার রহমান, ফেনীর দাগনভুঁইয়ার মো. সাইফুল ইসলাম এবং সিরাজগঞ্জ সদরের মো. আসলাম হোসেন।

আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রতারণা, জালজালিয়াতি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভুয়া এমবিবিএস সনদ ব্যবহারের মাধ্যমে এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে রেজিস্ট্রেশন সনদ গ্রহণ করেছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এ মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে গতকাল সোমবার মাহমুদুল হাসান হাইকোর্টে এসেছিলেন। পরে তার আইনজীবী শাহিনুর আলম সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলায় আমার মক্কেল চার নম্বর আসামি। কিন্তু আদালত আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়ে আমার মক্কেলকে শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। একই সঙ্গে আদালত মামলার অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান এই আইনজীবী। 

ওই ১২ জন বাংলাদেশি চীনের তাইশান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিবিএস পাশ করেছেন বলে মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে সদন জমা দিয়েছিলেন। গত বছরের জানুয়ারিতে দুদক চীনের বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে সনদপত্রগুলো যাচাই করতে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পাঠিয়েছিল।

দুদকের মামলায় আরও বলা হয়, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন প্রকার সতর্কতা বা নিয়ম-নীতির প্রতিপালন করেনি।

LEAVE A REPLY