সৌদি আরবের মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, প্রায় তিন বছর কারাবন্দি থাকার পর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন দেশটির একজন রাজকুমারী এবং তাঁর কন্যা। প্রিন্সেস বাসমা বিনতে সৌদকে ২০১৯ সালে কারাবন্দি করা হয়, সে সময় তিনি চিকিৎসার জন্য সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
কিন্তু কেন তাঁকে বন্দি করা হয়েছিল, তা জানানো হয়নি। এমনকি প্রিন্সেস বাসমা কিংবা তাঁর মেয়ে সুহৌদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও আনা হয়নি। প্রিন্সেস বাসমা বিনতে সৌদকে ২০১৬ সাল থেকে দেশটির সংবিধান সংশোধনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিতে দেখা যায়। বিভিন্ন সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের খোলামেলা সমালোচনাও করেন। এখন মানবাধিকার ইস্যু এবং সংবিধান সংস্কারের পক্ষে তাঁর এই জোরালো অবস্থানের সঙ্গে এই বন্দিত্বের সম্পর্ক থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাঁর পরিবার ২০২০ সালে জাতিসংঘকে এক লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘বিভিন্ন অনিয়মের সমালোচক হিসেবে তাঁর রেকর্ড’ এর কারণে তাঁকে কারাবন্দি করা হয়ে থাকতে পারে। এ ছাড়া সাবেক ক্রাউন প্রিন্স মোহামেদ বিন নায়েফ, যাঁকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, তাঁর সঙ্গে প্রিন্সেস বাসমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণেও তিনি সরকারের রোষানলে পড়েছেন বলে অনেকে মনে করেন।
২০২১ সালের এপ্রিলে, ৫৭ বছর বয়সী প্রিন্সেস বাসমা সৌদি বাদশাহ সালমান এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহামেদ বিন সালমানের কাছে নিজের মুক্তি চেয়ে আবেদন করেন। আরজিতে তিনি লেখেন, তিনি অন্যায় কিছু করেননি এবং তাঁর শরীর খুবই খারাপ। তবে ২০১৯ সালে কী ধরনের শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা করাতে তিনি বিদেশে যেতে চেয়েছিলেন তা জানা যায়নি।
মানবাধিকার সংস্থা এএলকিউএসটি টুইটারে তাঁর মুক্তির খবর দিয়ে লিখেছে,
রাজধানীর বাইরে আল-হাইর কারাগারে যখন ছিলেন তখন তাঁকে ‘প্রাণ সংশয়ে থাকা
অবস্থায়ও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।’ সৌদি আরবভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি আরো
লিখেছে, বন্দি থাকা অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি।
প্রিন্সেস বাসমা বাদশাহ সৌদ (যিনি ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবের
শাসক ছিলেন)-এর কনিষ্ঠ কন্যা।
সূত্র : বিবিসি বাংলা