করোনা চিকিৎসায় ভিটামিন ডি এর প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সূর্যের সংস্পর্শে আসলে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। তবে করোনাকালে সবাই যেখানে বাড়ি বসে আছে সেখানে শরীরে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এজন্য করোনার এই সময়ে প্রত্যেকের উচিত শরীরে ভিটামিন ডি কী পরিমাণে আছে তা পরীক্ষা করে দেখা।
করোনায় ভিটমিন ডি’র গুরুত্ব:
করোনা চিকিৎসায় ভিটামিন ডি-এর প্রভাব সম্পর্কে সরাসরি কোনো প্রমাণ না থাকলেও প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার কারণে বিশেষজ্ঞরা এটিকে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা হিসেবে বিবেচনা করছেন। করোনা সংক্রমণ মায়োকার্ডাইটিস, মাইক্রোভাসকুলার থ্রম্বোসিস এবং/অথবা সাইটোকাইনের দিকে নিয়ে যায় যার সাথে প্রদাহ জড়িত। ভিটামিন ডি-এর প্রাথমিক ভূমিকা হল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং প্রদাহ কমানো এবং সম্ভবত এই কারণেই করোনা প্রতিরোধে ভিটামিন ডি গ্রহণ বাড়ানোর পরামর্শ রয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেন যথাসম্ভব মেনে বাড়ি থাকার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে এর ফলে শরীরে ভিটামিন ডি’র পরিমাণ কমে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন:
ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটা, মিনিয়াপলিস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক বলেছেন, “আমাদের মতামত হল যে ভিটামিন ডি যদি নিউমোনিয়া/এআরডিএস, প্রদাহ, প্রদাহজনক সাইটোকাইনস এবং থ্রম্বোসিসের ক্ষেত্রে করোনার তীব্রতা কমিয়ে দেয়, তাহলে সাপ্লিমেন্টগুলো তুলনামূলক সহজ বিকল্প হবে।”
কম ভিটামিন ডির কারণে সাইটোকাইনের বৃদ্ধি এবং নিউমোনিয়া এবং উপরের শ্বাস নালীর সংক্রমণের উল্লেখযোগ্যভাবে সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিন ডি-এর অভাব থ্রম্বোটিক এপিসোড বৃদ্ধি যায়, যা প্রায়শই করোনায় দেখা যায়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ডি-এর ঘাটতি বেশি দেখা গেছে। আর এ অবস্থা উচ্চ মৃত্যুর কারণ বলছে গবেষকরা।
হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথের মতে, ২০০৯ সালে মৌসুমী এবং মহামারী ফ্লুর একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের সম্ভাবনা ১২ থেকে ৭৫ শতাংশ কমিয়েছে। সাপ্লিমেন্টেশনের উপকারী প্রভাব সব বয়সের রোগীদের মধ্যে রয়েছে এবং দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা গেছে। যারা সংক্রামিত হয়েছিল, তাদের মধ্যে ফ্লুর লক্ষণ কম ছিল এবং যদি তারা ১ হাজার আইইউ-এর বেশি ভিটামিন ডি-এর ডোজ গ্রহণ করে থাকে তবে তাদের সুস্থতা দ্রুত এসেছিলো।
যা করা যেতে পারে:
ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট সম্পর্কে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও প্রতিদিন কয়েক মিনিটের জন্য সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসা উচিত। এছাড়া ভিটামিনযুক্ত খাবার খেতে হবে। চর্বিযুক্ত মাছ যেমন স্যামন, কড লিভার অয়েল, মাশরুম, গরুর দুধ, সয়া দুধ এবং ডিম ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ। সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের সবসময় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি দেখা যায়। সেক্ষেত্রে সাপ্লিমেন্ট জরুরি।