রাইমা ইসলাম শিমু
অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমু হত্যাকাণ্ডে তাঁর স্বামী খন্দকার সাখাওয়াত আলী নোবেলের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাল্যবন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদ। দুজনে মিলে শিমুকে হত্যা করেন। আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে তাঁরা হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। গতকাল শুক্রবার সংশ্লিষ্ট আদালতের পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে নোবেল এবং মিশকাত শুকরানার আদালতে ফরহাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন আসামিদের আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
নোবেল ও ফরহাদকে তিন দিন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। এতে জানানো হয়, দুজন মিলেই অভিনেত্রী শিমুকে হত্যা করেছেন বলে রিমান্ডেও স্বীকার করেছেন।
এর আগে পুলিশ বলেছিল, দাম্পত্য কলহের জেরে নোবেল ঝগড়ার এক পর্যায়ে শিমুকে গলা চেপে ধরেন। এতে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে বাল্যবন্ধু ফরহাদকে ডেকে এনে মরদেহ গাড়িতে তুলে দুজন মিলে সাভার, আশুলিয়া ও মিরপুর বেড়িবাঁধের দিকে ফেলার চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসেন। পরে সন্ধ্যার দিকে আবার বের হন, কেরানীগঞ্জে গিয়ে মরদেহ ফেলে আসেন তাঁরা। সেখান থেকে ফিরে শিমুর বোনকে সঙ্গে নিয়ে কলাবাগান থানায় নিখোঁজের জিডি করেন নোবেল।
তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে নতুন তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘নোবেলের বাল্যবন্ধু ফরহাদ ঢাকার একটি মেসে থাকেন। তাঁর তেমন উপার্জন নেই। কয়েক দিন পরপরই তিনি খুব সকালে নোবেলের বাসায় গিয়ে টাকা-পয়সা নিতেন। ঘটনার দিন গত রবিবার সকালেও তিনি নোবেলের রাজধানীর গ্রিনরোডের বাসায় যান। এক পর্যায়ে শিমুর সঙ্গে নোবেলের ঝগড়া হয়। তখন নোবেলের সঙ্গে ফরহাদও তাঁকে হত্যায় সহায়তা করেন। ওই সময় বাসার অন্য ঘরে নোবেল-শিমুর সন্তানরা ঘুমিয়ে ছিল। তারা তখন কিছু টের পায়নি বলে স্বজনরা জানিয়েছিল। ’
কী নিয়ে নোবেল ও শিমুর মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল—এমন প্রশ্ন করা হলে পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর তা এড়িয়ে বলেন, নোবেল ও ফরহাদ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ বিষয়ে পুলিশ আরো বিস্তারিত তদন্ত করছে।
এর আগে গত সোমবার কেরানীগঞ্জ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে চিত্রনায়িকা শিমুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই দিন রাতে তাঁর ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে নাম-পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরদিন কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নোবেল ও তাঁর বন্ধু ফরহাদের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন শিমুর ভাই হারুনুর রশীদ।