প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু সেই স্বপ্ন পরে দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। টেস্ট সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হারের পর তারা ওয়ানডে সিরিজও হেরে বসেছে। আজ শেষ ওয়ানডে ভারত হেরে গেলে তারা ৩-০ ব্যবধানে ধোলাই হবে।
ইতিমধ্যে বিরাট কোহলিদের পারফরম্যান্সের কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে গেছে। পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে সফরে গিয়েও কেন তাদের এই হাল- সেটা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বিস্তর।
ব্যাটিং ব্যর্থতা : টেস্টে চেতেশ্বর পুজারা এবং আজিঙ্কা রাহানে বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন। ওপেনাররা ব্যর্থ হলে ভারতীয় ব্যাটিংকে এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার টানতে পারেন না। ভারতীয় মিডল অর্ডারের ব্যাটিং দুর্বলতা এখনো আছে। ওয়ানডে ক্রিকেটেও রান তাড়া করা হোক বা প্রথমে ব্যাট করে বড় রান তোলা, সব কিছুতেই ব্যর্থ মিডল অর্ডার। পুরো সিরিজে মিডল অর্ডার নিয়ে বারবার সমস্যায় পড়তে হয়েছে ভারতকে।
বোলিং ব্যর্থতা : টেস্ট সিরিজে ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ শামি। তিন ম্যাচে ১৪টি। কিন্তু উইকেট শিকারের প্রথম তিনে কোনো ভারতীয় নেই। ওয়ানডে সিরিজে আবার শামি নেই। তিন টেস্টে অশ্বিন নিয়েছেন মাত্র ৩ উইকেট। ওয়ানডে সিরিজে মাত্র ১টি। বুমরা টেস্ট সিরিজে নিয়েছেন ১২টি উইকেট, ওয়ানডে সিরিজে ৩টি। বোলাররা উইকেট নিতেই পারছেন না। এটাও ভারতের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ।
কোহলিকে ঘিরে বিতর্ক : দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার আগের সংবাদ সম্মেলন থেকে বিতর্কের শুরু। বোর্ড সভাপতির দাবি নাকচ করে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। পুরো সফরেই সেই বিতর্কের আগুন ধিকিধিকি করে জ্বলেছে। টেস্ট সিরিজ হেরে সাদা পোশাকের নেতৃত্বও ছেড়ে দেন কোহলি। ড্রেসিংরুমে অবশ্যই তার প্রভাব পড়েছে। হারের পেছনে বিরাট কোহলির অধিনায়কত্ব ছাড়াকে একটি কারণ বলে মনে করছেন অনেকে।
রাহুলের অনভিজ্ঞ নেতৃত্ব : প্রথম টেস্টে জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টে চোটের জন্য খেলতে পারেননি বিরাট কোহলি। দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন লোকেশ রাহুল। কিন্তু সেই ম্যাচ তাঁর ফিল্ডিং সাজানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুনীল গাভাস্কার। বাউন্ডারি না পেলেও ডিন এলগাররা খুব সহজে সিঙ্গেলস-ডাবলস নিয়েছেন। ওয়ানডে সিরিজে প্রথম ম্যাচে হারের পর একই দল নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে নামে ভারত। ভুলগুলোও না শোধরানোয় দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে সিরিজ খোয়াতে হয়।
অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস : সাম্প্রতিক সময়ে ভারত অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতেছে। ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজে এগিয়ে আছে। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকা পাড়ি দিয়েছিল ভারত। কিন্তু প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের পর সেই আত্মবিশ্বাসটাই কি অতিরক্ত আত্মবিশ্বাস হয়ে গেছে? সেই আত্মবিশ্বাসের ফাঁক গলে ভারতীয় দলকে লজ্জার মুখে ফেলে দিয়েছে প্রোটিয়ারা।