‘গ্যাসের দাম বাড়ালে পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে’

গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে সংকটে পড়বে দেশের স্পিনিং শিল্পে। একইসঙ্গে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পোশাক রপ্তানিতে।

আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই শঙ্কার কথা জানিয়েছে বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ।

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, সহ-সভাপতি ফজলুল হক এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার সর্বোচ্চ দরের রেকর্ড এবং অভ্যন্তরীণভাবে গ্যাসের দর বৃদ্ধি এবং নিরবচ্ছিন্ন সরবাহ সংকটে পড়েছে বস্ত্রখাত। তুলার দর আন্তর্জাতিক বিষয়-এ নিয়ে সরকারের কিছু করার নেই।

তিনি বলেন, গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং নতুন করে গ্যাসের দর না বাড়ানোর মাধ্যমে স্থানীয় বস্ত্র এবং পোশাক খাতকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। তা নাহলে বস্ত্র খাতের সংকটের চাপ শেষপর্যন্ত রপ্তানিমুখী পোশাক খাতে নেতিবাচক প্রভাব ডেকে আনবে।

মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, উৎপাদন কম হলে সার আমদানির বিকল্প সুযোগ রয়েছে। তবে সুতা এবং বস্ত্র আমদানি লাভজনক নয়। এ ছাড়া হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ অলস পড়ে থাকলে কর্মসংস্থানসহ তা সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বস্ত্র কলে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিটিএমএর দেওয়া অন্য প্রস্তাব তুলে ধরে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, বস্ত্র ও পোশাক খাতের জন্য স্বতন্ত্র একটি জ্বালানি নীতি গ্রহণ করা। প্রতি ৫ বছরের জন্য নেওয়া এই নীতির ভিত্তিতে গ্যাসের দর নির্ধারণ হোক। যাতে বিনিয়োগ করতে একটা ধারণা পান উদ্যোক্তারা।

গ্যাসের দর না বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে বিটিএম সভাপতি বলেন, গত চার বছরে দেড় হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে তিতাস। এত মুনাফার পরও কেন কার স্বার্থে আবারও গ্যসের মূল্য বৃদ্ধি করতে চায় তিতাস। গত ১০ বছরে গ্যাসের দর বৃদ্ধি করা হয়েছে ৩৬২ শতাংশ। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদান ব্যয় বেড়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে এক কেজি সুতা উৎপাদনে বিদ্যুত বাবদ ব্যয় হচ্ছে ২০ টাকা। এর মধ্যে যদি আবারও গ্যাসের দর ১১৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। এই প্রস্তাব পাস হলে সুতা উৎপাদনে কেজি প্রতি বিদুত বাবত ব্যয় দাড়াবে ২৩ টাকা। এমনিতে বিশ্ববাজারে তুলার অস্থিতিশীল মূল্যের কারণে চাপে রয়েছে বস্ত্র ও পোশাক খাত।

তুলা-সুতার দর যে হারে বেড়েছে সে হারে মূল্য দিচ্ছেনা বিদেশি ক্রেতা এবং ব্র্যান্ডগুলো। এ অবস্থায় গ্যাসের দর বাড়ানো হলে বস্ত্র ও পোশাক খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বস্ত্র, রপ্তানিমুখী পোশাক খাত ও স্থানীয় বস্ত্র খাত। বৈধ এবং অবৈধভাবে দেশে আসা সুতা এবং কাপড়ের সঙ্গে দর প্রতিযোগিতায় টেকা সম্ভব হবে না। দেশের বস্ত্র কলগুলো ক্রমাগত লোকসানের কারণে প্রথমে ঋণ খেলাপী এবং এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যাবে। এতে তৈরি পোশাকের সরবরাহ চেইন বিপর্যস্ত হবে।

LEAVE A REPLY