বাফুফের হঠকারিতায় বাদ কিংসের মাঠ

দেশের প্রথম কোনো ক্লাব হিসেব নিজেদের হোম ভেন্যুতে ম্যাচ খেলে ইতিহাস গড়ার পথে ছিল বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু সেই পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। প্রিমিয়ার লিগ শুরুর মাত্র ৪১ ঘন্টা আগে ঘোষণা আসে লিগের ভেন্যু হিসেবে থাকছে না বসুন্ধরা ক্রীড়া কমপ্লেক্স। কারণ, বসুন্ধরা ক্রীড়া কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ এই মাঠে বসুন্ধরা কিংস ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ছাড়া অন্য কোনো দলকে হোম ভেন্যু হিসেবে খেলতে দিবে না।

আর এতেই চটেছে বাফুফে। বদলেছে নিজেদের সিদ্ধান্ত। তাদের দাবি বাকি দলগুলোর জন্যেও এই মাঠ উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সংস্কার কাজ চলমান থাকায় ঢাকায় মাঠ সংকটে পড়েছে বাফুফে। সে সংকট কিছুটা হলেও কাটিয়ে তুলতে এগিয়ে আসে বসুন্ধরা ক্রীড়া কমপ্লেক্স। কিন্তু সেই এগিয়ে আসাটাই হয়তো পছন্দ হয়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের। প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ আয়োজনের জন্য বসুন্ধরা ক্রীড়া কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের কত-শত প্রস্তুতি। ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মাঠসহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো প্রস্তুত করতে হবে। সে লক্ষ্যে আধুনিক ড্রেসিংরুমের পাশাপাশি ডাগআউট, সাংবাদিকদের প্রেসবক্স এবং দর্শকদের জন্য গ্যালারির কাজও সম্পন্ন করে ফেলে কর্তৃপক্ষ।

বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনার ড্রেসিংরুম তৈরি করা হয়েছে ইউরোপীয়ান ধাচে। ঘাসের কার্পেট লাগিয়ে যা করা হয়েছে সৌন্দর্য্যময়। শুধু ড্রেসিংরুম নয়, ডাগআউটেও আনা হয়েছে নতুনত্ব। যা দেখলে আপনার নজর কাড়তে বাধ্য করবে। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনার সবুজ ঘাসের মাঠে ফুটবলাররা নিজেদের কারু-কাজ দারুন ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। এমন সমতল ও সবুজে বিস্তরণ মাঠও অপেক্ষায় ছিল প্রিমিয়ার লিগের জন্য। যাদের মাধ্যমে দেশের ফুটবলের খবরাখবর সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে সেই ক্রীড়া সাংবাদিকদের জন্য বানানো হয়েছে দারূন একটি প্রেস বক্স। যেখানে বসে ১০০ জনের অধিক সাংবাদিক একত্রে ম্যাচ কাভার করতে পারবেন।

এবার নজর দেওয়া যাক গ্যালারিতে, সেটাও আপনাকে দিতে পারে স্বস্তির ছোয়া। কেননা ইউরোপীয়ান মাঠগুলোর মতো মূল মাঠ থেকে একদমই সন্নিকটে গ্যালারির অবস্থান। যেখানে বসে আপনি সুন্দরভাবে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। গ্যালারি এতই কাছে যে, ফুটবলারদের মুভমেন্ট, বচনভঙ্গিও শুনতে পাবেন। যা আপনাকে আলাদা তৃপ্তি দিবে। কিন্তু এরকম উন্নতমানের একটি ভেন্যুকেই বাদ দিয়ে দিল বাফুফে।

প্রিমিয়ার লিগের জন্য বাফুফের হাতে আছে এখন দুটি স্টেডিয়াম। এর মধ্যে একটি হল মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়াম ও অন্যটি টঙ্গীর আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়াম। মুন্সিগঞ্জের স্টেডিয়ামটি ফুটবলের জন্য মোটামুটি উপযুক্ত ও মুক্ত থাকলেও টঙ্গীর মাঠে মূলত আর্চ্যাররা অনুশীলন করে থাকে। যেটা রোমান সানা, দিয়া সিদ্দিকিদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লড়াইয়ের মানসিকতা তৈরির প্রস্তুতি নেওয়ার জায়গা। সেখানেও বাগরা বসিয়েছে বাফুফে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে এসে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ আয়োজন করেছিল গতবার, এবারো তাই করছে। গত মৌসুমে তো এই মাঠ ব্যবহার করতে গিয়ে আর্চ্যারি ফেডারেশনের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছিল বাফুফে।

LEAVE A REPLY