জান্তা সেনার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ আরাকান আর্মির

আরাকান আর্মির কয়েকজন সদস্য -ফাইল ছবি

মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) গতকাল সোমবার অভিযোগ করেছে, সামরিক বাহিনী অস্ত্রবিরতি সত্ত্বেও তাদের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে। বিদ্রোহী আরাকান আর্মি অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশের একমাত্র ‘স্থিতিশীল এলাকা’ রাখাইনের পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছে জান্তার বিরুদ্ধে।

গত বছরের ফেব্র“য়ারি মাসের অভ্যুত্থানের পর রাখাইনে আরাকান আর্মির সঙ্গে অস্ত্রবিরতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে মিয়ানমার জান্তা। সে কারণে এতদিন অঞ্চলটিতে কোনো দমনপীড়নও চালায়নি সামরিক বাহিনী।

অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির বাকি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা চলমান। সামরিক বাহিনী দেশব্যাপী বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন চালিয়ে আসছে। জনগণের মধ্য থেকে গড়ে উঠেছে সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনী। তাছাড়া সীমান্ত এলাকায় পুরনো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ বেড়েছে। শুধু ব্যতিক্রম ছিল রাখাইন প্রদেশ।  

সেনা অভ্যুত্থানের কয়েকদিন পরই এএ’র সঙ্গে অস্ত্রবিরতি পুনরায় নিশ্চিত করে জান্তা। কিন্তু গত শুক্রবার সেনারা এএ’র ঘাঁটিতে প্রবেশ করে বলে জানান বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এক মুখপাত্র। তিনি বলেন, সেনারা মংদাও জনপদে প্রবেশ করে তিন ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায়। প্রাথমিকভাবে আরাকান আর্মির একজন সদস্য মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন ওই মুখপাত্র।

তিনি বলেন, ‘সামরিকভাবে প্রবল উত্তেজনা বিরাজ করছে, তা যেকোনো সময়ে সংঘাতে রূপ নিতে পারে। মনে হচ্ছে, সামরিক বাহিনী রাখাইনের স্থিতিশীলতা ও শান্তি নষ্ট করতে চাচ্ছে। ’
এদিকে সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, ৪ ফেব্র“য়ারি মাইন বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন সীমান্ত পুলিশ নিহত হয়েছেন। তবে তিনি এ ঘটনার জন্য স্থানীয় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের একটি গোষ্ঠিকে দায়ী করেন। জাও মিন তুন নামের ওই মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এখনো ঘটনাটির তদন্ত করছি এবং এলাকায় এএ’র কোনো উপস্থিতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছি। ’

শ্যন টার্নেলের মুক্তি নিয়ে বিভ্রান্তি :
এদিকে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন তার মধ্যস্থতায় অস্ট্রেলীয় অর্থনীতিবিদ শ্যন টার্নেলকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলার পর মিয়ানমার জান্তা এর সত্যতা অস্বীকার করেছে। রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগে সুচির সঙ্গে টার্নেলেরও বিচার চলছে।

গতকাল সোমবার হুন সেন বলেন, রবিবার টার্নেলকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কম্বোডীয় প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, গত মাসে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিং অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে তার বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে টার্নেলকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন টার্নেলের মুক্তির ব্যাপারটি অস্বীকার করে বলেন, বৈঠকে হুন সেন টার্নেলের মুক্তির বিষয়টি তুলেছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইং এ বিষয়ে বলেছেন, আইনগত বিষয়টি শেষ হলে তিনি বিষয়টি ভেবে দেখবেন। ’

সু চির উপদেষ্টা টার্নেলকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে রবিবার মিয়ানমারের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিস পেন।

শ্যন টার্নেলের অপরাধ ঠিক কী তা স্পষ্ট নয়। তবে রাষ্ট্রীয় টিভিতে বলা হয়েছিল, তার রাষ্ট্রের গোপন আর্থিক তথ্য পাওয়ার সুযোগ ছিল এবং তিনি দেশটি থেকে পালাতে চেষ্টা করেছিলেন। সূত্র: এএফপি।

LEAVE A REPLY