রোমাঞ্চকর জয়ে প্লে অফে চট্টগ্রাম; ঝুলে রইল ঢাকা

ছবি : মীর ফরিদ

মিরপুর শের-ই-বাংলায় জমজমাট থ্রিলার শেষে শেষ হাসি হাসল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। প্রতিপক্ষ সিলেট সানরাইজার্সের দেওয়া ১৮৬ রানের কঠিন টার্গেট তারা পেরিয়ে গেছে ৫ বল এবং ৪ উইকেট হাতে রেখেই! দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে চট্টগ্রামের জয়ের নায়ক উইল জ্যাকস। এই জয়ে প্লে অফ নিশ্চিত করে ফেলল আফিফ হোসেনের দল। আর শঙ্কায় পড়ে গেল মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা।

প্লে অফ খেলতে হলে মাহমুদউল্লাহদের এখন তাকিয়ে থাকতে হবে আজ সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিতব্য খুলনা টাইগার্স বনাম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ম্যাচের দিকে। সেই সঙ্গে মুশফিকের খুলনার পরাজয় কামনা করতে হবে।  

kalerkantho

ছবি : মীর ফরিদ

kalerkantho

রান তাড়ায় নেমে ঝােড়ো শুরু করা ছাড়া উপায় ছিল না চট্টগ্রামের। তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে জাকির হাসানকে (৯ বলে ১৭) ফিরিয়ে ২৫ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন সোহাগ গাজী। আরেক ওপেনার উইল জ্যাকসের শুরুটা ছিল ধীরগতির। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অধিনায়ক আফিফ হোসেন। ৭ বলে ৭ রান করা এই তরুণ ব্যাটারকেও ফেরান সোহাগ গাজী। ৩৯ রানে নেই চট্টগ্রামের ২ উইকেট। ধীরে ধীরে হাত খুলতে শুরু করেন উইল জ্যাকস। ক্যারিবীয় ক্রিকেটার চ্যাডউইকেট ওয়ালটনকে নিয়ে এগিয়ে নিতে থাকেন দলের স্কোর। তবে বেড়েই যাচ্ছিল আস্কিং রান রেট। ১২তম ওভারে জুবায়ের লিখনকে পরপর দুই ছক্কা মেরে পঞ্চম বলে রান আউট হয়ে যান ওয়ালটন। ২৩ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৩৫ রান করা ওয়ালটনের বিদায়ে ভাঙে ৪১ বলে ৬৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।  

ছবি : মীর ফরিদ

kalerkantho

৩৫ বলে ফিফটি তুলে নেন উইল জ্যাকস। জয়ের জন্য শেষ ৬ ওভারে চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল ৫৯ রানের। জ্যাকসের ব্যাটিং তোপে ব্যবধান কমে আসতে থাকে। চট্টগ্রাম বিপদে পড়ে যায় টুর্নামেন্টজুড়ে আগ্রাসী ব্যাটিং করা বেনি হাওয়েলের বিদায়ে। আলাউদ্দিন বাবুর বলে লং অনের সীমানা দড়ির ওপর ইনগ্রামের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন ৮ বলে ৮ রান করা বেনি হাওয়েল। জমে ওঠে ম্যাচ। হাত খুলে খেলতে থাকেন উইল জ্যাকস আর শামীম হোসেন। ১৬তম ওভারে ৭ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ২১ রান করা শামীমকে ফিরিয়ে সিলেটকে দারুণ ব্রেক থ্রু দেন আলাউদ্দিন বাবু। জয় থেকে চট্টগ্রাম তখন ১৫ রান দূরে। মেহেদি মিরাজের (২) বিদায়ে ম্যাচ আরো জমে ওঠে। শেষ ওভারে প্রয়োজন হয় ৪ রানের। আলাউদ্দিন বাবুকে প্রথম বলেই বিশাল ছক্কা মেরে চট্টগ্রামকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন উইল জ্যাকস। ৫৭ বলে ৯২* রানে অপরাজিত থাকেন এই ইংলিশ তারকা। তাঁর ইনিংসে ছিল ৮টি চার এবং ৪টি ছক্কার মার।  

ছবি : মীর ফরিদ

kalerkantho

এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলায় দিনের প্রথম ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৮৫ রান তোলে সিলেট সানরাইজার্স। দলকে ভালো শুরু এনে দেন কলিন ইনগ্রাম এবং এনামুল হক বিজয়। ১৯ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ২৪ রান করা ইনগ্রাম মেহেদি মিরাজের শিকার হলে ৪১ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি। এরপর মৃত্যুঞ্জয়েবর বলে মিজানুর রহমান ‘ডাক’ মারলে শঙ্কায় পড়ে সিলেট। তবে ভরসা জোগায় এনামুল আর সিমন্সের ব্যাট। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে আসে ৫০ রান। তৃতীয় উইকেটে দুজনে গড়েন ৩৮ বলে ৫৪ রানের দারুণ জুটি। ১২ ওভারে ১০০ ছুঁয়ে ফেলে সিলেটের স্কোর। ২৭ বলে ৫ চার ২ ছক্কায় ৪৩ করা সিমন্সকে ফেরান মৃত্যুঞ্জয়।  

ছবি : মীর ফরিদ

ওপেনার এনামুলও এই পেসারের তৃতীয় শিকার হন। মৃত্যুঞ্জয়ের বলে বোল্ড হওয়ার আগে এনামুলের সংগ্রহ ২৬ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৩২ রান। শেষের দিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন সিলেট অধিনায়ক রবি বোপারা এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। পঞ্চম উইকেটে তাঁদের ৪১ বলে ৮০ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহ গড়ে সিলেট। শরীফুলের শিকার হওয়ার আগে বোপারা ২১ বলে ২ চার এবং ৪ ছক্কায় করেন ৪৪ রান। আর মোসাদ্দেক ২২ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৩৫* রানে অপরাজিত থাকেন। ২০ ওভারে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৮৫ রান। ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ১টি করে নেন শরীফুল আর মিরাজ।

LEAVE A REPLY