রবসনের গোলে জয়ের হাসি বসুন্ধরা কিংসের

শুরুটা ছিল কঠিন,সুযোগ বানিয়েও নিঁখুত ফিনিশিংয়ের অভাবে মুক্তিযোদ্ধার রক্ষণভাগে চির ধরাতে পারছিলোনা চ্যাম্পিয়নরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর ভুল করেনি কিংস, গত লিগে ২১ গোল করা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন রবিনহো বক্সের সামনে থেকে দুর্দান্ত গোল করে বসুন্ধরা কিংসকে এনে দেন টানা দ্বিতীয় জয়। সুযোগ এসেছিল ব্যবধান বাড়ানোর কিন্তু পেনাল্টি মিস করে সেই সুযোগ হারান স্তোয়ান ভ্রানিয়েস।

শনিবার টঙ্গীর আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদকে ১-০ গোলে হারায় বসুন্ধরা কিংস।

জয়সূচক গোলটি করে এবারের লিগের প্রথম গোলের দেখা পান রবসন। এই জয়ে তিন ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। উত্তর বারিধারা বিপক্ষে ম্যাচের একাদশ থেকে দুই পরিবর্তন করে মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে মাঠে নামে কিংস। লেফট ব্যাক ইয়াসিন আরাফাতের পরিবর্তে রিমন হোসেন এবং মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদের জায়গায় শুরুর একাদশে ঢুকেন মাসুক মিয়া জনি।

শেষ ম্যাচের জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে এ ম্যাচেও জয়ের খুঁজে নামে বসুন্ধরা কিংস। সে লক্ষ্যে শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধার উপর আক্রমণাত্বক অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। গোলের খুঁজে মুক্তিযোদ্ধার রক্ষণভাগে ভয় ধরায় রবসন-ভ্রানিয়েসরা। অষ্টম মিনিটে বসনিয়ান ভ্রানিয়েসের ফ্রিকিক ক্রস বারের উপর দিয়ে চলে যায়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণে উঠে মুক্তিযোদ্ধাও। তবে ভাঙতে পারেনি খালেদ শাফি-তারিক কাজীদের নিয়ে গড়া কিংসের রক্ষণভাগ।

২১ মিনিটে কিংসকে রক্ষা করেন আনিসুর রহমান জিকো। মাঝ মাঠে সোহেল রানার কাছ থেকে বল কেড়ে নেন জাপানিজ সোমা ওতাঞ্জ, গোল পোস্ট ছেড়ে খানিকটা এগিয়ে আসেন জিকো। তাই মাঝ মাঠ থেকেই সুযোগ সন্ধানী দুরপাল্লার শট নেন সোমা কিন্তু লাফিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন জিকো। পাঁচ মিনিট বাদেই দারুন সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি কিংসের অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড সবুজ। মুক্তিযোদ্ধার দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে কাট ব্যাক করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন, কিন্তু গোলমুখ থেকে ঠিক-ঠাক পা লাগাতে পারেনি তৌহিদুল আলম সবুজ।

প্রথমার্ধের ঠিক মিনিট খানেক আগে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রবসন। বেশ খানিকটা পথ ড্রিবলিং করে বল নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার ডি বক্সে ঢুকে সোহেলকে পাস দেন এই ব্রাজিলিয়ান। ফিরতি পাসে আবারো বল পান রবসন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি তিনি। তার জোরালো শট ফিরিয়ে দেন মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক রাজিব। দ্বিতীয়ার্ধে বসুন্ধরা কিংস যেন আরো ধারালো। আক্রমণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫৮ মিনিটে তুলে নেয় গোল।  

বিশ্বনাথের থ্রো মুক্তিযোদ্ধার দিদারুল হেডে ক্লিয়ার করলে বল পান সোহেল রানা। সেখান থেকে বাড়িয়ে দেন বাঁ দিকে থাকা রবসনের উদ্দেশ্যে। বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি বক্সের সামনে কিছুক্ষণ বল পায়ে রেখে মুক্তিযোদ্ধার বেশ কয়েকজন ডিফেন্ডারকে কোনো সুযোগ না দিয়ে ডান পায়ের নিঁচু শটে দুরের পোস্টে লক্ষ্যভেদ করেন রবসন রবিনিয়ো। লিগের প্রথম গোল তাই দুই হাত উপরের দিকে তুলে উদযাপনে খানিকটা আবেগ প্রকাশ করলেন রবসন রবিনহো।   

সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু ৭৬ মিনিটে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে দেন বদলি নামা ওবায়দুর রহমান নবাব। হাবিবুর রহমানের কর্নারে হেড করেন আইমেদ আইমান কিন্তু গোললাইন থেকে হেড করে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন নবাব। বড় বাঁচা বেঁচে যায় কিংস। পরের মিনিটেই মুক্তিযোদ্ধার ডি বক্সে রবসনকে ফেলে দেন মহি উদ্দিন। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু স্পট কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন স্তোয়ান ভ্রানিয়েস। বল মারেন বাইরে। ফলে আর ব্যবধান বাড়েনি কিংসের।  

প্রথম তিন ম্যাচেই হারের তিক্ত স্বাদ পেল মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদ। এর আগে আবাহনীর কাছে ১-০ এবং শেখ জামালের কাছে ৩-০ গোলে হেরেছিল তালিকার তলানীতে থাকা দলটি।

LEAVE A REPLY