নিপুণের লিভ টু আপিলের শুনানি আগামীকাল

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে বসা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে নিপুণ আক্তারের আবেদনের শুনানির কথা ছিল আজ।  তা পিছিয়ে আগামীকাল সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নির্ধারণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।  

আজ রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নিপুণ আক্তারের আইনজীবীর সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি পিছিয়ে এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ।  

আদালতে নিপুণের আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন, আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান খান।

জায়েদ খানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম।

শুনানির শুরুতে আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমরা হাইকোর্টের আদেশের অনুলিপি পেয়েছি। এটা (মামলাটি) কালকে আসুক, নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে দিই। এক সঙ্গেই শুনানি হোক। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, আগামীকাল (সোমবার) শুনানি এক নম্বরে থাকবে।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে বসা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত স্থগিত করে ওই পদে ‘স্থিতাবস্থা’ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। নিপুণ আক্তারের আবেদনের শুনানির পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ আদেশ দেন চেম্বার বিচারক ওবায়দুল হাসান।  

বিচারক আদেশে বলেন, ‘আজ ৯ তারিখ। এই কয়দিন (১৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার পর্যন্ত চার দিন) কিচ্ছু হবে না। কেউ ঢুকবেও না, ঢুকবে না, আমি বলে দিচ্ছি। ’ আর্থাৎ রবিবার পর্য্ন্ত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে কেউই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। ’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল ও নিপুণ আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত গত ৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিত করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়েদ খানের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতেও নির্দেশ দেন আদালত।

সে আদেশ স্থগিত চেয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিলেন নিপুণ আক্তার।  

গত ২৮ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের পরদিন ঘোষিত ফলে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চনকে এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফলে দেখা যায়, নিপুণ আক্তারের চেয়ে ১৩ ভোট বেশি বিএফডিসির সাধারণ সম্পাদক পদে জয় পান জায়েদ খান।

নির্বাচনের সময়ই টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ করেছিলেন নিপুণ। তাতে সাড়া না পেয়ে তিনি আপিল করেন। তার আপিলে ভোট পুনর্গণনা হওয়ার পর ফল একই থাকে। এরপর নিপুণ সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে ভোট কেনার অভিযোগ তোলেন। পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন তিনি।

তার আবেদনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ ফেব্রুয়ারি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে আপিল বোর্ডকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলে গত শনিবার দুই পক্ষকে নিয়ে বসার উদ্যোগ নেন সোহান। কিন্তু ২৯ জানুয়ারির পর নির্বাচনী আপিল বোর্ড বিলুপ্ত হয়েছে এবং এ আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নাই দাবি করে সে বৈঠকে যাননি জায়েদ খান।   সেদিন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারকে জয়ী ঘোষণা করেন।

গত ২ ফেব্রুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তরের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ ফেব্রিুয়ারি নির্বাচনী আপিল বোর্ডের দেওয়া এ সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।  

এক সপ্তাহের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজসেবা অদিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, উপপরিচালক, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সোহানুর রহমান সোহান, মোহাম্মদ হোসেন, নিপুণ আক্তার ও মোহাম্মদ হোসেন জেমিকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।  

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি রুল শুনানির তারিখ রয়েছে উচ্চ আদালতে।  

LEAVE A REPLY