অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন হার্টের সমস্যাকে বাড়িয়ে দেয়। তাই হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি। বর্তমান জীবনধারায় সামান্য পরিবর্তনই আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতে জরুরি।
হার্টের ভালো স্বাস্থ্যের জন্য আমরা সবাই আমাদের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে ব্যায়াম করি, স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে থাকি এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চলি।
কিন্তু কত দিন আমরা এই রুটিন অনুসরণ করতে পারি তাই প্রশ্নের বিষয়।
দিনে অন্তত একবার হাঁটুন :
হাঁটা যেকোনো ব্যায়ামের মতোই উপকারী। যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং ডাক্তাররা প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটার পরামর্শ দেন। আপনি এটি প্রথমে ১০ মিনিট হাঁটা দিয়ে শুরু করতে পারেন। হঠাৎ করে ৩০ মিনিট হাঁটার পরিবর্তে আপনি ধীরে ধীরে হাঁটার সময় বাড়াতে পারলে ভালো হয়।
হাঁটার গুরুত্ব সম্পর্কে ২০১০ সালের একটি গবেষণা সমীক্ষা বলছে, “এপিডেমিওলজিকাল স্টাডিজ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে দৈনিক হাঁটার পরিমাণ বাড়ানো না হাঁটার চেয়ে অনেক ভালো। এতে ফিটনেস, শরীরের গঠন, রক্তচাপ এবং লিপিড প্রফাইল ঠিক থাকে। দীর্ঘমেয়াদি সুবিধার মধ্যে রয়েছে সিএইচডি এবং মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস।
সকালের নাশতা গুরুত্বপূর্ণ :
আমাদের মধ্যে অনেকেই সকালের নাশতা ঠিকভাবে করে না। কিন্তু দিনের শুরুর খাবারটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
মোনাশ ইউনিভার্সিটি, মেলবোর্নের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিভাগের রিচার্ড ওফোরি-আসেনসো এবং অন্যদের দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষণা বলছে, যারা নাশতা করে তাদের তুলনায় যারা করে না তাদের ঝুঁকি অনেক বেশি। যারা নাশতা করেন না তাদের কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ২১ শতাংশ বেশি এবং এ থেকে মৃত্যুও হচ্ছে। এ ছাড়া যারা প্রতিদিন নাশতা করেন না তাদের অন্যান্য রোগে মৃত্যুর আশঙ্কাও যারা প্রতিদিন করেন তাদের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি। এ জন্য সারা দিন শরীরকে সচল রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নাশতা করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যালোরি মেপে খান :
সুস্থ থাকার অন্যতম উপায় হলো ক্যালোরি মেপে খাওয়া। একজন নারীর জন্য দৈনিক দুই হাজার ক্যালোরি এবং পুরুষের জন্য ২৫০০ ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিত।
বাড়ির কাজের মাধ্যমে ব্যায়াম করা :
প্রতিদিন যে আপনাকে জিমে যেতে হবে এমন না। বাড়ির অনেক কাজের মাধ্যমে আপনি নিজেকে ফিট রাখতে পারেন। যেমন বাড়িতে বইয়ের তাক যখন গোছাবেন তখন দেখবেন দুটি ভারী বই ওঠালে আপনার হাতের ব্যায়াম হবে।
মন ভালো রাখা :
মেডিটেশন করা হার্ট ভালো রাখার জন্য উপকারী। বিশেষজ্ঞরা সব সময় খারাপ হার্টের জন্য মানসিক চাপ এবং বিষণ্নতাকে দায়ী করেন। এ জন্য হার্ট ভালো রাখতে মন ভালো রাখা জরুরি। মেডিটেশন মূলত মানসিক উন্নতিকে নিশ্চিত করে।
নিজেকে পরিষ্কার রাখুন :
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। হাত পরিষ্কার করা যেমন কভিডের ঝুঁকিকে দূরে রাখে, তেমনি নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা শরীর থেকে অনেক অবাঞ্ছিত এবং ক্ষতিকারক রোগজীবাণুকে দূরে রাখে। নিউমোনিয়া, ফ্লু এবং অন্যান্য ভাইরাল সংক্রমণের মতো সংক্রামক রোগ হৃদরোগের জন্য ক্ষতিকর।
ইতিবাচকতা চাবিকাঠি :
নেতিবাচকতাকে প্রাধান্য দেবেন না। নিজেকে সুখি ও সন্তুষ্ট রাখুন। রাগ, শত্রুতা সব সময় হার্টের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
সূত্র : দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া