নারী ও পুরুষের শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে পার্থক্য থাকার কারণে অনেক রোগ লিঙ্গভেদে ভিন্ন প্রভাব ফেলে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের কথা আসলে পুরুষের তুলনায় নারীদের ঝুঁকি বেশি। বিশেষ করে নারীরা যখন গর্ভবতী থাকে বা সন্তানধারণের চেষ্টা করে তখন যদি টাইপ-২ ডায়াবেটিস থাকে সেক্ষেত্রে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন।
সুগার লেভেল ঠিক করার জন্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কার্যকর উপায় হলো স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।
যেসব নারীদের ডায়াবেটিস আছে তারা তালিকায় পাঁচটি খাবার রাখতে পারেন। এতে করে সুস্থ থাকবে শরীর এবং ঝুঁকিও কমবে।
তৈলাক্ত মাছ:
তৈলাক্ত মাছ যেমন স্যালমন, ম্যাকরল, সার্ডিন, টুনাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। এই ফ্যাটি এসিড পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা, লিপিডের মাত্রা উন্নত করে এবং হরমোনের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করে। প্রতিদিন এই জাতীয় মাছ খেলে হৃদরোগের ঝুঁকির পরিমাণ কমে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতেও জরুরি তৈলাক্ত মাছ।
আদা:
আদা বিশ্বের স্বাস্থ্যকর মশলা হিসাবে পরিচিত তাই আপনার খাবারের তালিকায় আদা রাখুন। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য থাকায় আদা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে। খাদ্যতালিকায় আদা রাখলে তা হার্ট, থাইরয়েড এবং পাচনতন্ত্রের জন্যও ভালো। মশলাটি বিভিন্ন খাবারের স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করে। আপনি হয় কাঁচা আদার রুট বা আদার গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারেন।
হলুদ:
হলুদ একটি মসলা যা সাধারণত প্রতিটি বাড়িতে পাওয়া যায়। তরকারিতে রঙ আনার পাশাপাশি হলুদের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি সহ কিছু রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। কারকিউমিন, যা হলুদের প্রধান যৌগ, তা অগ্ন্যাশয়ের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে ইনসুলিনের মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখে। এই সুপারফুডের সুবিধা পেতে আপনি আপনার খাবারে হলুদের গুঁড়া বা গাছের তাজা মূল ব্যবহার করতে পারেন।
সবুজ শাক:
পালং শাকের মতো শাকসবজিতে পুষ্টি, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। সবুজ শাক-সবজিতে সহজে হজমযোগ্য ফাইবার থাকে যাতে ক্যালোরি কম থাকে যা রক্তে শর্করার মাত্রা না বাড়িয়ে দ্রুত শরীর দ্বারা শোষিত হতে পারে। সবুজ শাকসবজি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে, শরীরের প্রদাহ কমাতে পারে এবং সেলুলার ক্ষতি নিরাময় করতে পারে।
আখরোট:
আখরোট শরীরের জন্য পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর । ক্ষুধা সংবরণ করতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা ভারসাম্য রাখতে আখরোট অনেক উপকারী। আখরোটে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে এবং ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আপনার হার্টকে রক্ষা করতে পারে। গবেষণা বলছে, প্রতিদিন আখরোট খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং সুস্থ থাকার জন্য দিনে দুটি আখরোটই যথেষ্ট।
সূত্র: দ্যা টাইমস অব ইন্ডিয়া