পাকিস্তানে কঠোর সাইবার নিরাপত্তা আইন পাসের উদ্যোগ

বিচারমন্ত্রী ফারুগ নাসিম।

পাকিস্তান সরকার একটি নতুন কঠোর সাইবার নিরাপত্তা আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছে। এর আওতায় সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগ ও সরকারি কর্মচারীদের সম্পর্কে ‘ভুয়া সংবাদ’ প্রচার করলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের পাঁচ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে।

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা আজ সোমবার জানান, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মন্ত্রিসভা আইনটি অনুমোদন করেছে। গত সপ্তাহান্তে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি এতে স্বাক্ষরও করেছেন।

আইনটি অবিলম্বে কার্যকর হওয়ার কথা। তবে আইনে পরিণত হওয়ার জন্য এটি ৯০ দিনের মধ্যে পার্লামেন্টে উপস্থাপন করতে হবে। আশা করা হচ্ছে, ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার সহজেই এটি পাস করিয়ে নিতে পারবে।

সমালোচকরা বলছেন, পাকিস্তান সরকারের এই আইন মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ক্রমবর্ধমান আঘাতের নতুন নজির। দেশটি ইতিমধ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রথাগত গণমাধ্যমের ওপর সরকারের চাপের ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে। বলা হয়, চাপের কারণে  সেখানে ব্যাপক ‘স্বেচ্ছা আরোপিত সেন্সরশিপ’ তৈরি হয়েছে।

পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন আইনটিকে ‘অগণতান্ত্রিক’ আখ্যা দিয়ে বলে, ‘এটি…নিঃসন্দেহে সরকার ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠনের ভিন্ন মতাবলম্বী ও সমালোচকদের দমন করতে ব্যবহার করা হবে। ’

বিদ্যমান আইনে অনলাইনে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে ব্যক্তির গোপনীয়তা ও সুনামহানি নিষিদ্ধ ছিল। এটি সংশোধন করে তৈরি নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে যেকোনো কম্পানি, সংগঠন বা সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কর্তৃপক্ষ, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। সন্দেহজনক আটক ব্যক্তির জামিন হবে না।

রবিবার পাকিস্তানের বিচারমন্ত্রী ফারুগ নাসিম বলেন, ‘এটি গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা, এমন গুজব ভিত্তিহীন। ’ তিনি আরো বলেন, ‘আপনি সমালোচনা করতে স্বাধীন, কিন্তু বিষয় হচ্ছে যে, কোনো মিথ্যা তথ্য দেওয়া উচিত নয়। ’ 

পাকিস্তানের ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এ ‘দানবীয় সংশোধনী’কে আদালতে মোকাবিলার কথা বলেছে।

সূত্র: এএফপি

LEAVE A REPLY