কাওসার আহমেদ চৌধুরীর গীতিকার হয়ে ওঠার গল্প

কাওসার আহমেদ চৌধুরী

কাওসার আহমেদ  কবি, লেখক, গীতিকার, চিত্রশিল্পী এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বয়স যখন ১১ বছর, তখন থেকেই কবিতা আর জ্যোতিশাস্ত্রের প্রতি অনুরাগ তৈরি হয় কাওসার আহমেদ চৌধুরীর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে ভর্তির পর স্বপ্ন দেখেন চিত্রশিল্পী হওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন বেশিদিন স্থির হয়নি।

এরপর চিত্রনির্মাতা হওয়ার ঝোঁক পেয়ে বসল। পরিচয় হয়েছিল ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে। অভিনয়ের সুযোগ পেয়েও করা হয়ে ওঠেনি ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ে। তবে এদেশের সঙ্গীত প্রেমীদের কাছে কাওসার আহমেদ চৌধুরী হয়ে উঠেছিলেন এক অনবদ্য গীতিকার। যার গানের কথামালার কারণে ভক্তরা দীর্ঘ সময় মনে রাখবে এই মানুষটিকে।

বাংলাদেশের কয়েকটি ব্যান্ড ও সংগীতশিল্পীর জন্য গান রচনা করেছেন কাওসার আহমেদ চৌধুরী। এলআরবি ব্যান্ড, শিল্পী সামিনা চৌধুরী, লাকী আখান্দ এবং নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর কণ্ঠে তাঁর লেখা বেশ কিছু গান শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে।

সিলেট বেতারে কাওসার আহমেদের লেখা প্রথম গান প্রচারিত হয়। তবে অনেক গান পূর্বে লিখেছিলেন, শুধু বয়স কম হওয়ার কারনে বেনামে সেসব প্রচার হতো।  

পরবর্তীতে তিনি টেলিভিশনে তালিকাভুক্ত হন। কিন্তু লাকী আখান্দের সঙ্গে পরিচয়ের পর কাওসার আহমেদের গান লেখার প্রতি ঝোঁক বেড়ে যায়। ১৯৭২ সালের দিকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে লাকী আখান্দের সাথে পরিচয়। প্রথম পরিচয়েই লাকী আখান্দ কিছু গান চেয়ে বসলেন কাওসার আহমেদের কাছে। সেই গানগুলোর অসাধারণ সুর করলেন লাকী আখান্দ। একটি ছিল ফেরদৌস ওয়াহিদের গাওয়া ‘পলাতক সময়ের হাত ধরে’, আরেকটি সামিনা চৌধুরীর গাওয়া ‘বলো না তুমি কোথায়?’।

পরবর্তীতে দুজনের মধ্যে তৈরি হয় বন্ধুত্ব। শোনা যায় লাকী আখন্দকে ছাড়া আর কারো কাছে গান দিতেন  না তিনি। লাকীর কথা ছিল- কাওসার আহমেদের জন্ম গান লেখার জন্যে। লাকী আখন্দের মৃত্যুর আগপর্যন্ত তাদের বন্ধুত্ব ছিল।  

তাঁর লেখা জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে, আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠে ‘এই রুপালি গিটার ফেলে’ লাকী আখন্দের কণ্ঠে ‘আমায় ডেকো না ফেরানো যাবে না’ কুমার বিশ্বজিতের কণ্ঠে যেখানেই সীমান্ত তোমার সেখানেই বসন্ত আমার’ সামিনা চৌধুরীর কণ্ঠে ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে’ নিয়াজ মোহাম্মদের কণ্ঠে ‘আজ এই বৃষ্টির কান্না দেখে মনে পড়ল’ ফিডব্যাকের মাকসুদের কণ্ঠে ‘মৌসুমি কারে ভালোবাসো তুমি’ এই প্রজন্মের নাফিস কামালের কণ্ঠে ‘এই শহরে এক নগর ছিল’ উল্লেখযোগ্য।

LEAVE A REPLY