দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক : কী ও কেন?

পূর্ব ইউক্রেনের স্বঘোষিত দুই বিদ্রোহী অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক। গত সোমবার স্বাধীনতার জন্য তাদের নেতাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বীকৃতি দিয়েছে মস্কো। ২০১৪ সালেই কিয়েভের নিয়ন্ত্রণ থেকে বের হয়ে আসে অঞ্চল দুটি। এর পর থেকেই সেখানে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই চলছে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের।

চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। কিন্তু কী এই অস্থিরতার কারণ? কেন এত তোলপাড় এ অঞ্চল নিয়ে?

দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক
খনি অঞ্চল দনবাসের মূল শহর বলা হয় দোনেৎস্ককে। এর চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে খনিজ বর্জ্য। খনিপ্রধান এ শিল্পকেন্দ্র একসময় পরিচিত ছিল ‘স্টালিনো’ নামে। ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান ইস্পাত উৎপাদন কেন্দ্রও এ শহরটি। এখানে বর্তমানে বসবাস ২০ লাখ মানুষের।  

অন্যদিকে, শিল্প শহর লুহানস্ক একসময় পরিচিত ছিল ‘ভরোশিলোভগ্রাদ’ নামে। এখানকার বর্তমান অধিবাসীর সংখ্যা ১৫ লাখ। খনি উপত্যকায়ই একে অন্যের সঙ্গে এসে মিলেছে শহর দুটি। বড় কয়লা মজুদের ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত কৃষ্ণসাগরের উত্তর তীর দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গেও সীমান্ত রয়েছে দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের।

সংঘাত
২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে রাশিয়া ক্রিমিয়া সংযুক্ত করে নেয়। এর পরই ক্রেমলিন সমর্থিত এক বিদ্রোহে কিয়েভের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে অঞ্চল দুটি। দনবাস উপত্যকাকে কেন্দ্র করে চলছে কিয়েভ ও মস্কোর এক সাংস্কৃতিক লড়াইও।   মস্কো বলছে, পূর্ব ইউক্রেনের বড় একটি অঞ্চল জুড়ে থাকা রুশ ভাষাভাষীদের ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদের হাত থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন। দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের স্ব-ঘোষিত স্বাধীনতায় স্বীকৃতি দেয়নি আন্তর্জাতিক মহলের প্রায় কেউই।  

দ্বন্দ্ব নিরসনের প্রচেষ্টা 
পূর্ব ইউক্রেনের চলমান এ দ্বন্দ্ব নিরসনে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল মিন্‌স্ক চুক্তি। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ইউক্রেন সরকার ও বিচ্ছিন্নতাবাদী উভয় পক্ষই চুক্তি লঙ্ঘনের  অভিযোগ এনেছে একে অন্যের বিরুদ্ধে। একাধিকবার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার কারণে ব্যর্থ হয়েছে কয়েকটি যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টাও।
গত কয়েক বছরে পূর্ব ইউক্রেনে বিভিন্ন হামলা ও সহিংসতায় নিহত হয়েছে অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদী। এদের মধ্যে ২০১৮ সালের আগস্টে দোনেৎস্কের একটি ক্যাফেতে বোমাবর্ষণে মারা যাওয়া বিদ্রোহী নেতা আলেকজান্ডার জাখারচেংকো’র নামই সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য। সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি এমন কিছু প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, এ ধরনের আক্রমণের নেপথ্যে ছিল ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী।   

সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

LEAVE A REPLY