টাইগারদের দাপুটে সিরিজ জয়

ছবি : মীর ফরিদ

এক ম্যাচ হাতে রেখে দাপটের সঙ্গেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলল বাংলাদেশ। লিটন-মুশফিকের দারুণ ব্যাটিংয়ে তিনশ ছাড়ানো স্কোর গড়ার পর বল হাতে তাসকিন-সকিব-শরীফুলরা চেপে ধরেন আফগানদের। কঠিন টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে আফগানরা ২১৮ রানে গুটিয়ে যায়। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে নেয় ৮৮ রানের বড় ব্যবধানে।

দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ম্যাচসেরা হয়েছেন লিটন দাস। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল।  

kalerkantho

ছবি : মীর ফরিদ

kalerkantho

রান তাড়ায় নেমে দলীয় ৯ রানেই প্রথম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। শরীফুলের করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে দ্রুত রান নিতে গিয়ে মিড-উইকেট থেকে আফিফ হোসেনর সরাসরি থ্রুতে রান-আউট হয়ে যান রিয়াজ হাসান (১)।  এই শরীফুলের বলেই দলীয় ১৬ রানে মুশফিকের গ্লাভসে ধরা পড়েন অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহিদী (৫)। এরপর মঞ্চে আবির্ভাব সাকিবের। তার ঘূর্ণিতে মুশফিকের দ্রুততায় স্টাম্পড হয়ে যান আজমতুল্লাহ ওমরাজাই (৯)। ৩৪ রানে তিন উইকেট পতনের পর দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন ওপেনার রহমত শাহ আর নাজিবুল্লাহ জারদান।  

ছবি : মীর ফরিদ

kalerkantho

ইনিংসের ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে নাজিবুল্লার লফটেড শটে ওঠা সহজ ক্যাচ লং অফে শরীফুলের হাত ফসকে বাউন্ডারি হয়ে যায়। পরের বলেই রিভিউ নিয়ে বেশ অদ্ভুত রান-আউট থেকে বেঁচে যান রহমত শাহ। ২০ ওভারে আফগানদের স্কোর একশ ছাড়ায়। ৭১ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৫২ রান করা রহমতকে বোল্ড করে ৯০ বলে ৮৯ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি ভাঙেন তাসকিন। এরপর নাজিবুল্লাহও ফিফটি তুলে নেন। ব্যক্তিগত ৫৪ রানে তিনি তাসকিনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। সাকিবের ঘূর্ণিতে কিপার-ব্যাটার রহমতুল্লাহ গুরবাজ (৭) বোল্ড হলে আফগানরা ১৫১ রানে ৬ষ্ঠ উইকেট হারায়।  

ছবি : মীর ফরিদ

kalerkantho

আফগানদের পরাজয় তখন নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। সপ্তম উইকেটে দুই তারকা স্পিনার মোহাম্মদ নবি আর রশিদ খান পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করেন। ৪০ বলে ৩২ করা নবিকে ফেরান মিরাজ। ৪১তম ওভারে একটি করে ছক্কা-চার হজম করার পর ২৬ বলে ২৯ করা রশিদ খানকে বোল্ড করে প্রথম শিকার ধরেন মুস্তাফিজ। আফগানদের নবম উইকেটের পতন ঘটে মাহমুদউল্লাহর বলে মুজিবের বিদায়ে। সীমানার ওপর দারুণ ক্যাচ নেন বদলি ফিল্ডার মাহমুদুল। ৪৫.১ ওভারে আফিফের বলে ফারুকি (০) বোল্ড হলে ২১৮ রানে প্যাকেট হয়ে যায় আফগানিস্তান। ৮৮ রানের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলে বাংলাদেশ।  ২টি করে উইকেট নেন সাকিব-তাসকিন। বাকি পাঁচটি উইকেট পাঁচ বোলার ভাগাভাগি করেন।  

ছবি : মীর ফরিদ

kalerkantho

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ উইকেটে ৩০৬ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৩৮ রানে টাইগাররা প্রথম উইকেট হারায়। ফজলহক ফারুকীর বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন ২৪ বলে ১২ রান করা তামিম। লিটন দাসের সঙ্গী হন সাকিব। জুটিতে ৪৫ রান আসতে ফের ছন্দপতন। রশিদ খানের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ৩৬ বলে ২ চারে ২০ রান করা সাকিব আল হাসান। ১৫.২ ওভারে ৮৩ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন।  

ছবি : মীর ফরিদ

kalerkantho

২৫তম ওভারে নবীর তৃতীয় বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি তুলে নেন লিটন। বাংলাদেশি ব্যাটারদের দ্রুত আউট করতে ইনিংসের অর্ধেক পথেই সাত বোলার ব্যবহার করেছে আফগানিস্তান। তবে এতে  বিশেষ কিছু লাভ হয়নি। লিটনের পর মুশফিকও ৫৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ফিফটি পূরণ করেন। অন্যপ্রান্তে দারুণ ছন্দে থাকা লিটন দাস এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিন অংকের দিকে। ৪১তম ওভারে রশিদ খানকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের পাঁচ নম্বর সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ওপেনার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এটা তার প্রথম সেঞ্চুরি। তিন অংক ছুঁতে লিটন খেলেছেন ১০৭ বল, হাঁকিয়েছেন ১৪টি চার।  

ছবি : মীর ফরিদ

সেঞ্চুরির পর আগ্রাসী হয়ে ওঠা লিটনকে ৪৭তম ওভারে থামান ফরিদ আহমেদ। দ্বিতীয় বলে স্কয়ার লেগে মুজিবের তালুবন্দি হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ১২৬ বলে ১৬ চার ২ ছক্কায় ১৩৬ রান।   এর সঙ্গেই অবসান হয় ১৮৬ বলে ২০২ রানের তৃতীয় উইকেট জুটির। ঠিক পরের বলেই ক্যারিয়ারের ৯ম সেঞ্চুরির অপেক্ষা বাড়িয়ে  ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন ৯৩ বলে ৯ চারে ৮৬ রান করা মুশফিক। শেষের তিন ওভারে বেশি রান ওঠেনি। ফারুকী ইনিংসের শেষ ওভারে দেন মাত্র ৪ রান। এতে ৫০ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৩০৬। আফিফ ১৬* আর মাহমুদউল্লাহ ৬* রানে অপরাজিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY