ভ্লাদিমির পুতিন (বাঁয়ে) এবং নরেন্দ্র মোদি (ডানে)। ফাইল ছবি।
মস্কো এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে ভারত। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ছয় দিন ধরে চললেও সে কারণে কূটনৈতিক পথে মাপজোঁখ করে হাঁটতে হচ্ছে দেশটিকে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি) দিল্লির প্রথম বিবৃতিতেও সরাসরি কোনো দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে কূটনীতি ও সংলাপের সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে কর্ণপাত করা হয়নি বলে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে রাশিয়ার সমালোচনা করা বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গত শুক্রবার ভোটের আগে রাশিয়া কিংবা পশ্চিমাদের সমর্থন দেওয়ার মুখোমুখি হয়েছিল। তবে, ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে দিল্লি।
কিন্তু যত্ন সহকারে ভারতের বিবৃতি পড়ে দেখলে বোঝা যায়, দেশটি আরো এক ধাপ এগিয়ে গেছে এবং পরোক্ষভাবে মস্কোকে আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করতে বলেছে।
ভারত ‘জাতিসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মানের’ গুরুত্ব সম্পর্কে কথা বলেছে। ভারত এটাও বলেছে যে, জাতিসংঘের সকল সদস্য দেশকে গঠনমূলক পথ খুঁজে বের করতে হবে এবং নীতিগুলোকে সম্মান করতে হবে।
ভারতের এই অবস্থান কিছু প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে পশ্চিমের কাছে কিছু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটির সমর্থন প্রকৃতপক্ষে কোন দিকে যাচ্ছে।
ভালো বিকল্পের অভাব
ভারতের সাবেক কূটনীতিক জেএন মিশ্র বলেছেন, ‘বাছাই করার জন্য ভারতের কাছে বাজে এবং খারাপতর বিকল্প রয়েছে। ‘
তিনি আরো বলেছেন, ‘কেউ একই সময়ে উভয় দিকে কাত হতে পারে না। ভারত এমন কোনো দেশের নাম নয়, যা দেখায় যে- দেশটি মস্কোর বিরুদ্ধে যাবে না। যেকোনো একটি পক্ষ বাছাইয়ে ভারতকে সূক্ষ্ম বিবেচনা করতে হচ্ছে এবং দেশটি তা করেছে।
ইউক্রেন ইস্যুতে কূটনৈতিক ভারসাম্য ভারত বজায় রাখার বেশ কিছু কারণও রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- মস্কোর সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ সময়ের পরীক্ষিত প্রতিরক্ষা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক।
রাশিয়া ভারতের বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে এখনো রয়েছে। এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও রয়েছে তার মধ্যে। সে কারণে রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসার পরেও মুখ খুলছে না দিল্লি।
সূত্র: বিবিসি।