নিজের এনগেজমেন্টের আংটি সহশিল্পীকে উপহার পরী মনির

পরী মনি

সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সিনেমা তৈরি করছেন পরিচালক বাংলাদেশি অরণ্য আনোয়ার। সিনেমার নাম মা। ১৯৭১ সালে মৃত ঘোষণা করা সাত মাসের এক সন্তানের অসহায় মায়ের গল্প তুলে ধরা হবে ছবিতে। অরণ্য আনোয়ার পরিচালিত মা ছবির শুটিং চলাকালীন এক ঘটনার কথা ফেসবুক পোস্ট করেন পরিচালক।

মাত্র দু-মাস বয়সী সহশিল্পীকে আংটি উপহার দিয়েছেন পরী মনি। অরণ্য আনোয়ার পরিচালিত মা ছবির শুটিংয়ের সময় শুক্রবার ঘটে এই ঘটনা।

ছবিতে ওই শিশুকে পরী মনির সন্তান হিসেবে দেখানো হবে। শুটিংয়ের সময় শিশুটির সঙ্গে মায়ায় জড়িয়ে পড়েন পরী মনি। নিজের এনগেজমেন্টের একটি আংটি উপহার হিসেবে দেন শিশুটির মায়ের হাতে।

শুক্রবার রাতে পরিচালক অরণ্য আনোয়ার ফেসবুকে লেখেন, বেলা তিনটার দিকে শুটিং প্যাকআপ করে আমি টিমের সঙ্গে খেতে বসলাম। এ সময় কে একজন বলল, পরী আপু আপনাকে ডাকছেন। সেটের মধ্যে একটা রুমে পরী তখন রাজের সঙ্গে ঢাকায় ফিরে যাওয়ার আয়োজনে ব্যস্ত। আমাকে দেখে বলল, ভাইয়া, আমার সন্তানের চরিত্রে অভিনয় করা শিশুটাকে একটা ভালো গিফট দেয়া উচিত।

পরিচালকের কথায়, ওর কথা শেষ হওয়ার আগেই আমি উত্তর দিলাম, ওটা নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। আমি ব্যবস্থা করছি। বলেই আমি চলে এলাম। আমার মাথায় তখন খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ডে লাইটে একটা দৃশ্য শেষ করার চিন্তা। আমি পেশাদার মানুষ। আমার প্রোডাকশন আগেই শিশুটির সম্মানী বাবদ একটা অঙ্ক খামে করে ওর মায়ের হাতে তুলে দিয়েছে। সেটাকে আমি যথেষ্ট বলে মনে করি। খাওয়া শেষে উঠানে একটা দৃশ্যের শুটিংয়ের আয়োজন করছি, এ সময় আবার ঘরের ভেতর থেকে পরীর ডাক। আমি ব্যস্ত, তবু ভাবলাম ওকে বিদায় দিয়ে আসি। ঘরে ঢুকতেই দেখলাম রাজ আর পরীর হাতে একটা সোনার রিংয়ের ছোট বাক্স। পাশে বসা সেই শিশুটির মা।

পরী বলল, ভাইয়া, আমার দুটো এনগেজমেন্ট রিংয়ের একটা হচ্ছে এটা। আমি বাবুটাকে আপনার হাত দিয়ে এই রিংটা উপহার দিতে চাই। আমি হতভম্ব! কী বলে এই মেয়ে?

তিনি আরও লিখেছেন, পরী আবার বলল, গত কয়েকটা দিন ওর সঙ্গে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে ওর প্রতি আমার যে মায়া জন্মে গেছে। আমি আবেগাপ্লুত হলাম। শ্রদ্ধায় নত হলাম পরীর কাছে। বললাম, তুমি সত্যিই একটা পাগল। আচ্ছা, আসো তাহলে আংটি দেয়ার একটা ছবি তুলি এক সঙ্গে। রাজ বলল, নীরব ভালোবাসাটা নীরবই থাকুক ভাই। ছবি তোলার দরকার নেই।

ফেসবুকে ঘটনাটি শেয়ার করে অরণ্য আনোয়ার লিখেছেন, আমরা ছবি তুললাম না। কিন্তু পরীর এই আবেগের কথা আমি লিখব না, মানুষকে জানাব না, এতটা চাপা স্বভাবের মানুষ যে আমি নই। দুই মাস বয়সী শিশুটির বাবা একজন অটোরিকশাচালক, মা গৃহিণী। স্যালুট, পরী মনি। তোমাকে স্যালুট, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা।

এবারই প্রথম নয়, ঢালিউডে কান পাতলেই শোনা যায় পরী মনির উন্মুক্ত হৃদয় মনোভাবের কথা। যে যখন তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন, পরী মনি তাদের কাউকেই ফিরিয়ে দেননি বলে জানা যায়।এসআর

LEAVE A REPLY