রাশিয়ার সরাসরি সংবাদ অনুষ্ঠানে যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাকার্ড

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ওয়ানের সরাসরি সংবাদ সম্প্রচারের সময় এক নারীকে যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে পর্দায় উপস্থিত হতে দেখা গেছে। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘যুদ্ধ নয়, যুদ্ধ বন্ধ করুন, প্রপাগান্ডায় বিশ্বাস করবেন না। তাঁরা এখানে আপনাদের সামনে মিথ্যা বলছেন। ’

রাশিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী স্বাধীন সংস্থা ওভিডি-ইনফো জানায়, প্ল্যাকার্ড হাতে উপস্থিত হওয়া ওই নারীর নাম মারিনা ওভসিয়ান্নিকভা।

মারিনা ওই প্রতিষ্ঠানের একজন সম্পাদক। ঘটনার পর তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যায় প্রচার হওয়া সংবাদ অনুষ্ঠানে সংবাদ উপস্থাপকের পেছনে তাঁর হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘যুদ্ধ নয়, যুদ্ধ বন্ধ করুন, প্রপাগান্ডায় বিশ্বাস করবেন না। তাঁরা এখানে আপনাদের সামনে মিথ্যা বলছেন। ’

সংবাদ প্রচারের সময় তিনি বলছিলেন, ‘যুদ্ধকে না বলুন। যুদ্ধ বন্ধ করুন। ’ রাশিয়ার নাগরিকদের ইউক্রেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাঁরাই শুধু ‘এই উন্মাদনা’ বন্ধ করতে পারেন।

রাত ৯টায় প্রচারিত ‘টাইম’ শিরোনামের সংবাদ বিষয়ক অনুষ্ঠানটি সোভিয়েত যুগ থেকে প্রচার হচ্ছে। লাখ লাখ মানুষ এটি দেখে, বিশেষত বয়স্ক রুশরা।

ওভিডি-ইনফো একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, মারিনা বলছেন, তাঁর বাবা একজন ইউক্রেনীয় এবং মা রুশ। সে কারণে তিনি কাউকে শত্রু হিসেবে দেখেন না। এতে মারিনা আরো বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত কয়েক বছর ধরে আমি চ্যানেল ওয়ানে কাজ করছি, যাতে দেখা যাচ্ছে ক্রেমলিন প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে এবং আমি এখন এর জন্য খুব লজ্জিত। ’

ঘটনার পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস বলেছে, ‘রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকাণ্ডকে অবমূল্যায়নে’ জনসাধরণের কাজ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত আইনে মারিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হতে পারে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ শুরুর পর থেকে কড়া নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো। যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ায় নতুন একটি আইনে সামরিক বাহিনীর অভিযান নিয়ে ‘ভুয়া’ খবর প্রচার আইনবহির্ভূত ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে এসবের মধ্যেও কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সম্প্রচার অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যে একো নামের মস্কোর রেডিও স্টেশন ও টিভি রেইন নামের একটি অনলাইন টিভি অন্যতম। নোভায়া গেজেটা সংবাদপত্রও বিধি-নিষেধের মধ্যেই কাজ চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। শুধু প্রথাগত গণমাধ্যমই নয়, অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও বন্ধ রয়েছে রাশিয়ায়। যার মধ্যে ফেসবুক ও টুইটার রয়েছে। সোমবার ইনস্টাগ্রামও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি, এএফপি

LEAVE A REPLY