ভারতকে কি করোনার চতুর্থ তরঙ্গের জন্য প্রস্তুত হওয়া দরকার?

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ নতুন করে বেড়েছে। যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের বিভিন্ন অংশে সংক্রমণের হার বাড়ছে। গত দুই বছরের মধ্যে চীন এবং হংকংয়ে সর্বোচ্চ সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

করোনা মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে চার কোটি ৩০ লাখ ১২ হাজার ৭৪৯ জন এবং মারা গেছে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার ৬৩৬ জন। বিশ্বে করোনায় মৃত্যুর দিক দিয়ে ভারত তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।

এরই মধ্যে করোনার তিনটি তরঙ্গ দেশটিতে দেখা গেছে। এখন কথা হচ্ছে, ভারত কি করোনার চতুর্থ তরঙ্গের জন্য প্রস্তুতি নেবে?

ভারতের বর্তমান অবস্থা কেমন?

আশার কথা হলো, ভারতে করোনায় দৈনিক সংক্রমণের হার গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। করোনার ওমিক্রন ধরন ভারতে এর আগে ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। বর্তমানে সেটিও কমে গেছে।

গত ২১ মার্চ ভারতে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৪১০ জন। এর আগে চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি দেশটিতে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটেছিল। ওই দিন দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছিল তিন লাখ ৪৭ হাজার মানুষ। তবে ধীরে ধীরে করোনার সেই ধাক্কা সামলে নিয়েছে ভারত।

ভারত এখন পর্যন্ত ১৮০ কোটি ডোজ করোনা টিকা দিয়েছে। দেশটির প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৮০ শতাংশ পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়েছে। অন্তত ৯৪ শতাংশ প্রথম ডোজ নিয়েছে। দেশটিতে জীবনযাপন এবং বাণিজ্য অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে।

পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ডা. কে শ্রীনাথ রেড্ডি বলেছেন, ভারত এখন স্বাভাবিক রয়েছে।

ভারতের শীর্ষ প্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইটির বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ বছরের জুন মাসে করোনার চতুর্থ ধাক্কা শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং আগস্টে সংক্রমণের শীর্ষে উঠতে পারে।

তবে মহামারি বিশেষজ্ঞদের অনেকে এ নিয়ে গভীরভাবে সন্দিহান এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সতর্ক থেকেও আশাবাদী।

তাদের এই আশার কারণ হলো- বেশির ভাগ ভারতীয় করোনা টিকা নিয়েছে এবং তাদের শরীরে ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় ভাইরোলজিস্ট ডা. গগনদীপ কাং বলেছেন, ‘আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি। আমাদের উচ্চ পর্যায়ের টিকা দেওয়া রয়েছে এবং এ জন্য সরকারের প্রশংসা করা উচিত। আমাদের জনসংখ্যার মধ্যেও উচ্চ স্তরের সংক্রমণ রয়েছে; যা আমরা বিভিন্ন তরঙ্গের সময় দেখেছি। ‘

বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলেছেন, ‘টিকার তিনটি ডোজ দীর্ঘ সময়ের জন্য মানুষকে গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে। বুস্টার ডোজ শরীরকে আরো অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সাহায্য করে। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের ইমিউন প্রতিরক্ষার একটি মূল অংশ; বুস্টার ডোজ নেওয়ার ফলে ভারতীয়দের শরীরে এটি বাড়ছে। ‘ 

সে কারণে এবার ভারতীয়দের ততটা উদ্বেগের কিছু নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তার পরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
সূত্র : বিবিসি।

LEAVE A REPLY