খালেদার মুক্তির মেয়াদ ৬ মাস বা‌ড়ি‌য়ে প্রজ্ঞাপন জারি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়িয়ে বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেন। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াল সরকার।

ওই কর্মকর্তা জানান, বর্ধিত মেয়াদে খালেদা জিয়া ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে পারবেন।

তবে এ সময় তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। আগের মতো এ দুটি শর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।

গত ১ মার্চ খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো এবং চিকিৎসায় বিদেশে নেওয়ার জন্য তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন। পরে এ আবেদনের বিষয়ে মতামত নিতে তা আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। গত ১৬ মার্চ আইন মন্ত্রণালয় থেকে মতামত পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেটির খসড়া করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠায়। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদন হয়ে আসার পর প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। সেখানে তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানায় মেডিক্যাল বোর্ড। গত ১ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি।

গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো দুই দফা খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে যেতে হয়। ৭৬ বছর বয়সী এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী অনেক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

দুটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে বন্দি রাখা হয়।

২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। প্রথম দফা মুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে আসলে ওই বছরের ২৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে স্থায়ী মুক্তি চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের পর সরকার দ্বিতীয় দফায় গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ছয় মাসের জন্য তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ায়। এর মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার আবেদনও করে তার পরিবার। কিন্তু সরকার সেই প্রস্তাব আমলে না নিয়ে আরো দু-দফা মুক্তির মেয়াদ বাড়ায়, যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার।

LEAVE A REPLY