শিক্ষককে মারধর: ৩ দিন পর কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা

শরীয়তপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের ছাত্রলীগ নেতাদের খাবারের অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়ায় বাংলা বিভাগের প্রভাষককে মারধর করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। 

ঘটনার ৩ দিন পর কলেজ  ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা নিতে বাধ্য হয়েছে থানা পুলিশ। 

শনিবার পালং মডেল থানায় মামলাটি করা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক রাশেল জমাদ্দারকে আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। 

এদিকে বিচারের দাবিতে আজ মানববন্ধন করছেন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। 

কলেজের শিক্ষকরা জানান, গত বুধবার কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক সম্মান (অনার্স) চতুর্থ বর্ষের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষে কলেজের বাংলা বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে শুভেচ্ছা জানানোসহ খাবারের আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনে ছাত্রলীগের নেতাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি।

তারা আরও বলেন, কেন ছাত্রলীগ নেতাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি তা জানতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক রাশেল জমাদ্দার কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীকে নিয়ে বুধবার ৫টার দিকে বাংলা বিভাগে যান। 
সেখানে তারা বাংলা বিভাগের প্রভাষক বিএম সোহেলকে এ বিষয়ে জবাবদিহি করতে বলেন। তিনি তখন একটি অনলাইন ক্লাসের প্রশিক্ষণে ব্যস্ত ছিলেন। সোহেল বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন ছাত্রলীগ নেতাদের। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে সোহাগ ব্যাপারী বিএম সোহেলকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। 

তাৎক্ষণিক শিক্ষককে মারধরের প্রতিবাদে কলেজের শিক্ষক পরিষদ বুধবার রাতে কলেজে একটি জরুরি সভা করেছে। সভা শেষে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক ও শরীয়তপুর-১ (পালং জাজিরা) আসনের সংসদ সদস্যসহ উর্ধ্বতন কর্মকতাদের জানিয়েছেন ও সভায় এ ঘটনায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

এর পর ৩০ মার্চ  বুধবার রাতে পালং মডেল থানায় অধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ বাদী হয়ে মামলার জন্য দরখস্ত দিলেও পালং মডেল থানার ওসি মো.আক্তার হোসেন নানা অজুহাতে তাদেরকে রাত ২টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখেও রহস্যজনক কারণে মামলা গ্রহণ করেনি। 

৩ দিন পর শনিবার কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক রাশেল জমাদ্দারকে আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। 
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কলেজের ছাত্র আবুল হোসেন, হৃদয় আহম্মেদ, আলী ইমরান প্রমুখ। 
 
কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা গত চারদিন আগে আবেদন করলেও পুলিশ আজকে মামলা গ্রহণ করেছে। এখন সব কিছু আইন গত ভাবে চলবে। 

এ বিষয় জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ওসি মো.আক্তার হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকেই শিক্ষকরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তাই ঘটনার চারদিন পর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারী ও সাধারণ সম্পাদক রাশেল জমাদ্দারসহ আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

LEAVE A REPLY