শাহবাজ শরিফ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরানের সুপারিশে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এর পর থেকেই দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছে। বিরোধীরা আইনসভার অধিবেশন পুনরায় শুরু করেছেন। তাঁরা ডেপুটি স্পিকারের অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলের আদেশকে অবৈধ ঘোষণার পাশাপাশি শাহবাজ শরিফকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একতরফা ঘোষণা দিয়েছেন। খবর ডন, ইন্ডিয়া টুডে ও রয়টার্সের
শাহবাজ শরিফ সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই। ‘নতুন প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে আইনসভায় এরই মধ্যে ভাষণও দিয়েছেন শাহবাজ।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা শেরি রেহমান একটি ভিডিও টুইটে দাবি করেছেন, ১৯৭ জন সদস্য এমএল-এনের সাংসদ আয়াজ সাদিককে নতুন স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত করেছেন।
সাদিক স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ইমরান খানের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব চালু করেন। পার্লামেন্টে ইমরান জোটের সদস্যদের অনুপস্থিতিতে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে রায় দিয়েছেন বিরোধীদলীয় সাংসদেরা।
২৫ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি হওয়ার পর পার্লামেন্টের অধিবেশন পুনরায় আহ্বান করার ক্ষেত্রে এটি একটি প্রতিবাদী পদক্ষেপ বিরোধীদের। নিয়মানুসারে, স্থগিত হওয়া অধিবেশন কেবল প্রেসিডেন্ট বা স্পিকার ডাকতে পারেন।
দিনের শুরুতে ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নাকচ করেন। তিনি বলেন, এটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৫-এর বিরোধী।
এদিকে দেশটির সেনাবাহিনী জাতীয় পরিষদে এসব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা প্রত্যাখান করেছে।
শাহবাজ শরিফ, বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিসহ বিরোধী নেতারা ডেপুটি স্পিকারের পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন তাঁরা।
পাকিস্তানের সংবিধানের ২২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, পার্লামেন্ট ভেঙে যাওয়ার পর এখন প্রেসিডেন্ট একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন।
আজ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে পাকিস্তান। এর জেরে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট নোটিশ জারি করে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেয়ার সব রেকর্ড তলব করেছেন। এ নিয়ে বিরোধীদের আবেদনের শুনানি আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে দেশটির তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বিরোধীদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, তাঁরা চোখের পানি ফেলছেন। বিরোধীদের আগাম নির্বাচন থেকে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের হাতে এখন কঠিন কাজ। দেশে জরুরি অবস্থা জারি বা সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের মতো বিকল্প পথ খোলা রয়েছে। সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিলে ইমরানের সমর্থন বাড়বে।