ডেভিলদের হারের স্বাদ দিল এভারটন

প্রিমিয়ার লিগে শনিবার গুডিসন পার্কে স্বাগতিক এভারটনের বিপক্ষে বল পায়ে দাঁড়িয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার পল পগবা, পিছনে দাঁড়িয়ে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এভারটনের দুই ফুটবলার।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শনিবার ঘরের মাঠে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে হারিয়েছে এভারটন। অ্যান্থনি গর্ডনের একমাত্র গোলেই গুডিসন পার্কে জয় তুলে নিয়েছে ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের শিষ্যরা। অন্যদিকে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ পাঁচ ম্যাচের ৩টিতেই হারের স্বাদ পেল রালফ র‌্যাঙ্গনিকের শিষ্যরা।

শীর্ষ চারে থাকার লক্ষ্য নিয়েই এখন মাঠে নামতে হচ্ছে রেড ডেভিলদের। লিগের শেষ দুই ম্যাচে টটেনহামে ৩-২ গোলে হারানোর পর লেস্টার সিটির বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে রোনালদোরা। এবার এভারটনের মাঠে এসে তাদের বিপক্ষে ধরাশায়ী হয়ে বিপদই ডেকে আনল ইউনাইটেড।

এদিন দলের মূল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ছায়া হয়েছিলেন। বাকিরাও চেষ্টা করেছেন কিন্তু জালে বল জড়াতে পারেননি। অন্যদিকে নিজেদের মাঠে দারুণ ফুটবল খেলা এভারটন প্রথমার্ধেই পায় গোলের দেখা। ২৭তম মিনিটে ব্যবধান গড়ে দেয়া গোলটি করেন অ্যান্থনি গর্ডন। আর এই একটি গোলেই খেলার ভাগ্য গড়ে দেয়। রিচার্লিসনের পাস অ্যালেক্সের পা হয়ে পেয়ে যান বক্সের উপরে থাকা অ্যান্থনি গর্ডন। ২৪ বছর বয়সি এই ফরোয়ার্ডের জোরালো শট ইউনাইটেড ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুইয়ারের গায়ে লেগে বেশ খানিকটা দিক পাল্টে দেভিড দি গিয়াকে বিপরীত দিকে ছিটকে দিয়ে জালে জড়ায়।
বলের দখল কিংবা শট নেয়া সব দিকেই এগিয়ে ছিল ইউনাইটেড। ম্যানইউয়ের পোস্টে রাখা ৭টি শটের একটিও জালে না জড়ালেও এভারটনের ৫টি শটের একটি ঠিকই লক্ষ্যভেদ করে। আর সেটি থেকেই জয় নিশ্চিত হয় ল্যাম্পার্ডের শিষ্যদের।
আরেক ম্যাচে শনিবার রাতে উলভসকে ১-০ গোলে হারিয়েছে নিউক্যাসেল ইউনাইটেড। প্রথমার্ধের খেলা গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধের ৭২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন নিউক্যাসেল ফরোয়ার্ড ক্রিস উড।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এই জয়ে ৩০ ম্যাচ শেষে টেবিলের ১৭ নম্বরে থাকা এভারটনের পয়েন্ট হলো ২৮। অন্যদিকে ৩১ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে সাতে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ৩০ ম্যাচে ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে তাদেরই নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটি।
লা লিগায় নিজের সবশেষ ম্যাচে ক্যাম্প ন্যুতে বার্সেলোনার বিপক্ষে হারার পর শনিবার ঘরের মাঠে গ্রানাদাকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়েছে। তবে ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যায় গ্রানাদা। ২৩ মিনিটে ডারউইন মাচিসের গোলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় গ্রানাদা। এরপর ৩২ মিনিটে সেভিয়াকে সমতায় ফেরান দিয়াগো কার্লোস। জেসুস নাভাসের সেট পিস থেকে হেডে জালে বল জড়ান কার্লোস। এরপর প্রথমার্ধের খেলায় আর কোনো গোল না হলে ১-১ গোলে সমতা নিয়েই বিরতিতে যায় দুদল।

বিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধের খেলায় দুদলের মধ্যে জমজমাট লড়াই হয়। ৬৬ মিনিটে জেসুস করোনার সহায়তায় লুকাস ওকাম্পোসের গোলে এগিয়ে যায় সেভিয়া। ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে যখন ম্যাচ শেষের একেবারে দাঁড়প্রান্তে তখনই হোঁচট খায় সেভিয়া। ৮৮ মিনিটে লুইস মিলার ক্রস থেকে হেড দিয়ে বল জালে জড়ান ভিক্টোর দিয়াজ। ২-২ গোলে সমতায় ফেরে গ্রানাদা। তবে সমতায় ফিরতে সময় লাগেনি সেভিয়ার জন্য। অতিরিক্ত সময়ে ভাগ্য খুলে যায় সেভিয়ার জন্য। অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে ক্রোয়েশিয়ান তারকা ইভান রাকিতিচের পাস থেকে বল পেয়ে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন রাফা মীর। ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পরও থেমে থাকেনি সেভিয়া। অতিরিক্ত সময়ের নবম মিনিটে অলিভার তরেসের সহায়তায় এবার ডান পায়ের শটে জালে বল জড়ান আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার পাপু গোমেজ। ঘরের মাঠে ৪-২ গোলে এগিয়ে থেকেই খেলা শেষ করে সেভিয়া।

এই ম্যাচ জয়ের ফলে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে আবারো দুই নম্বরে উঠে এসেছে সেভিয়া। ৩১ ম্যাচে ১৬ জয়, ১২ ড্র ও ৩ হারে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ক্লাবটি। ৩০ ম্যাচে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রিয়াল মাদ্রিদ। সেভিয়ার থেকে ২ ম্যাচ কম খেলে ২৯ ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে বার্সেলোনা। বার্সেলোনার থেকে এক ম্যাচ বেশি খেলে সমান ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ।
বুন্দেস লিগায় ভিএফবি স্টুগার্টকে তাদের ঘরের মাঠে ২-০ গোলে হারিয়েছে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড। ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে জিওভান্নি রেইনা ইনজুরির কারণে উঠে গেলে মাঠে নামেন জুলিয়ান ব্র্যান্ড। এরপর ২টি গোলই এসছে এই জার্মান মিডফিল্ডারের পা থেকে। ম্যাচের ১২ মিনিটেই নরওয়ের স্ট্রাইকার আরলিং হরলান্ডের পাস থেকে বক্সের ডান কোণা থেকে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন জুলিয়ান ব্র্যান্ড। ভিএআরের সহায়তা নিয়ে গোলটি নিশ্চিত করেন রেফারি। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। এরপর প্রথমার্ধের খেলায় আর কোনো গোল না হলেও দ্বিতীয়ার্ধের ৭১ মিনিটে দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্র্যান্ড। এবার মার্কো রয়েসের সহায়তায় বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শটে জালে বল জড়ান এই জার্মান মিডফিল্ডার। এরপর আর কোনো গোল না হলে ২-০ ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ডর্টমুন্ড।

এ ম্যাচ জয়ের ফলে ২৯ ম্যাচে ১৯ জয়, ৩ ড্র ও ৭ হারে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে বুন্দেস লিগা টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে ডর্টমুন্ড। তাদের থেকে এক ম্যাচ কম খেলে ২৮ ম্যাচে ২১ জয়, ৩ ড্র ও ৮ জয়ে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানে আছে বায়ার্ন মিউনিখ।এসএইচ

LEAVE A REPLY