অতিরিক্ত ফল খাওয়াও আনতে পারে বিপদ

সুস্থ থাকতে প্রতিদিন ফল খাওয়া অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীরা যদি বেশি ফল খান তা হলে তা চিন্তার কারণ হতে পারে। কারণ ফল ব্লাড সুগার বাড়িয়ে দিতে পারে। আবার ফলই পারে রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে। তাই ডায়াবেটিস থাকলে ফল বাদ নয়, কিন্তু বুঝে খান।

মাপকাঠি বুঝে
যেকোনো ফলেই জল বাদে প্রধান উপাদান হল সুগার। তাই মাত্রাতিরিক্ত ফল খেলে রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এছাড়া ফলে ভিটামিন, খনিজ লবণ, অ‌্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার যথেষ্ট পরিমাণে থাকে, সেগুলি ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরো অনেক উপায়ে ডায়াবেটিস কমাতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের ফল খাওয়ার আগে জেনে নেওয়া উচিত কোন ফল খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে মূল মাপকাঠি হল গ্লাইসেমিক ইনডেক্স।

যেসব ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি সেই ফল খেলে রক্তে মিশে তা দ্রুত সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর যেসব ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম বা মাঝারি, সেগুলি খেলে চিন্তা কম।

গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মূলত তিন ধরনের হয়, কম (০-৫৫), মাঝারি (৫৬-৬৯), উচ্চ (৭০ বা তার বেশি) গ্লাইসেমিক ইনডেক্স। এই মাপকাঠিটিই বলে দেবে ডায়াবেটিসে কোন ফল খাওয়া যাবে, আর কোন ফল খাওয়া যাবে না।

কিছু সহজপ্রাপ‌্য ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স জেনে নিন

  • লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল- আপেল, কমলালেবু, নাশপাতি, স্ট্রবেরি, পেয়ারা, কালোজাম।
  • মাঝারি গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল- কলা, আনারস, আম, আঙুর, বেদানা, কিশমিশ, পেঁপে, কিউই, লিচু, আতা।
  • উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল- তরমুজ, খেজুর, সবেদা।

ডায়াবেটিসের কোন পর্যায়ে কতটা ফল?

  • প্রি-ডায়াবেটিক বা বর্ডার লাইন সুগার- সমস্ত রকমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল দৈনিক ২০০ গ্রাম খাওয়া যেতে পারে।
  • নিয়ন্ত্রিত সুগার- উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল সপ্তাহে দু’বার ২০০ গ্রাম খাওয়া যেতে পারে। অথবা মাঝারি বা কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল দৈনিক ২০০ গ্রাম খাওয়া যেতে পারে।
  • হাই সুগার- বেশি গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল বর্জন করে, দৈনিক ১০০ গ্রাম মাঝারি গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল খাওয়া যেতে পারে। অথবা ২০০ গ্রাম অল্প গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল খাওয়া যেতে পারে।
  • শিশুর ডায়াবেটিস থাকলে- ড্রাই ফ্রুটস, অ্যাডেড সুগার যুক্ত ক‌্যানড, প্রসেসড ফল বা ফলজাতীয় খাদ‌্য যেমন জ‌্যাম, জেলি, ক‌্যান্ডি, জুস ইত‌্যাদি বর্জন করতে হবে।
  • গর্ভাবস্থায় সুগার- লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল দৈনিক ২০০-৩০০ গ্রাম পর্যন্ত খাওয়া যেতে পারে।

ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি

  • পটাশিয়াম অনিয়ন্ত্রিত- যাদের কিডনির সমস‌্যা থাকে তাদের শরীর থেকে পটাশিয়াম পুরোপুরি অপসারিত হয় না, সেই কারণে শরীরে পটাশিয়াম বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে পটাশিয়াম যুক্ত ফল বাদ দিতে হবে যেমন – কলা, লেবু, খেজুর, ফলের রস, আম, বেদানা, চেরি, কিউই ইত‌্যাদি।
  • পটাশিয়াম নিয়ন্ত্রিত- এক্ষেত্রে পটাশিয়াম যুক্ত ফল বাদে সুগারের মাত্রা অনুযায়ী ১০০ গ্রাম ফল দৈনিক খাওয়া যেতে পারে। সুত্র : সংবাদ প্রতিদিনের।

টিআর

LEAVE A REPLY