হারের বৃত্তে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স

ইন্ডিয়ার প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) শনিবার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পথে বাউন্ডারি হাঁকান লোকেশ রাহুল।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) হারের বৃত্ত থেকেই বের হতে পারছে না ৫ বারের শিরোপা জয়ী মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। আসরে এ পর্যন্ত প্রথম ছয় ম্যাচের ছয়টিতেই হেরেছে রোহিত শর্মারা। শনিবার ষষ্ঠ ম্যাচে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টের বিপক্ষেও হেরেছে ১৮ রানে। ঘরের মাঠে শনিবার টস জিতে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছে রোহিত শর্মা।

প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়ক লোকেশ রাহুলের সেঞ্চুরির সুবাদে নির্ধারিত ওভার শেষে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১৯৯ রান সংগ্রহ করে লক্ষ্ণৌ। দুই উদ্বোধনী ব্যাটার লোকেশ রাহুল ও প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি ককের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩২ বলেই দলীয় ৫০ রান পূরণ করে বিনা উইকেটে। তবে এক বল পরেই ব্যক্তিগত ২৪ রানে ফেবিয়ার অ্যালেনের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন ডি কক। এরপর মানিশ পান্ডেকে নিয়ে ৭২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক। ইনিংসের ১৪তম ওভারে দলীয় ১২৪ রানের মাথায় আশি^নের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান মানিশ পান্ডে। সাজঘরে ফেরার আগে ৬ চারের সাহায্যে ২৯ বলে করেছেন ৩৮ রান। এরপর ব্যক্তিগত ১০ রানে জয়দেব উনাদকাটের বলে ব্যক্তিগত ১০ রানে আউট হন স্টয়নিস।

শেষদিকে ইনিংসের শেষ ওভারের চতুর্থ বলে লক্ষ্ণৌর চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে। চতুর্থ উইকেটে ১৫ রানে সাজঘরে ফেরেন দীপক হুদা। এরপর কুনাল পান্ডিয়া ব্যক্তিগত ১ রানে অপরাজিত থাকলেও অপর প্রান্তে কাজের কাজ করে ১০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন লোকেশ রাহুল। ৯ চার ও ৫ ছয়ের সাহায্যে মাত্র ৫৬ বলেই ব্যক্তিগত শতক পূরণ করেছেন তিনি। আইপিএলের এ আসরে এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি ও ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রথম সেঞ্চুরি। এর আগে রাজস্থান রয়্যালসের জস বাটলারও এই মুম্বাইয়ের বোলারদের বিপক্ষে ৬৮ বলে ১০০ রান করেছেন। তবে শনিবার লোকেশ রাহুল মাত্র ৬০ বলে খেলেছেন ১০৩ রানের ইনিংস। মুম্বাইয়ের হয়ে ২টি উইকেট নিয়েছেন জয়দেব উনাদকাট ও ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মুরুগান আশ্বিন ও ফেবিয়ান অ্যালেন।

২০০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করে মুম্বাইয়ের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও ইশান কিষাণ। তবে এই উদ্বোধনী জুটিকে উইকেটে থিতু হতে দেয়নি আবেশ খান। তৃতীয় ওভারেই ব্যক্তিগত ৬ রানে সাজঘরে রোহিত শর্মাকে সাজঘরে ফিরতে বাধ্য করেন তিনি। এরপর প্রোটিয়া ব্যাটার দিওয়ালাদ ব্রেভিসকে সঙ্গ দিয়ে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিল ইশান কিষাণ। দলীয় ৫৭ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেটে ব্রেভিস সাজঘরে ফেরেন। আবেশ খানের বলে আউট হওয়ার আগে ৬ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে মাত্র ১৩ বলে করেছিলেন ৩১ রান। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে ইশান কিষাণও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। এক্ষেত্রে আবেশ খানের বলে সরাসরি বোল্ড হন তিনি। আউট হওয়ার আগে ২ চারের সাহায্যে করেছেন মাত্র ১৩ রান।

সাত ওভার শেষ হওয়ার আগেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার সাজঘরে ফিরলে ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে যায় মুম্বাই। সেখান থেকেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল সুরিয়াকুমার যাদব ও তিলক বার্মা। তবে দুজনেই ইনিংসের ১৫ ও ১৬তম ওভারে সাজঘরে ফিরেন। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তিলক বার্মাকে ব্যক্তিগত ২৬ রানে সাজঘরে ফেরায় হোল্ডার। পরের ওভারেই বিষ্ণুর ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন সুরিয়াকুমার যাদব। এরপর আঠারোতম ওভারের চতুর্থ বলে আবেশ খানের বলে সাজঘরে ফেরেন ফেবিয়ান অ্যালেন। তারপর শেষ ওভারে ১৭৫ রানে সপ্তম ও ও ১৮১ রানে অষ্টম ও নবম উইকেট হারায় মুম্বাই। নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিল রোহিত শর্মার সতীর্থরা। লক্ষ্ণৌর হয়ে ৩ উইকেট পেয়েছেন আবেশ খান। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন জেসন হোল্ডার, দুশমান্থা চামিরা, রবি বিষ্ণু ও মার্কুইস স্টয়নিস।

এ জয়ের সুবাদে ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্ট। সমান ৮ পয়েন্ট নিয়ে গুজরাট টাইটানস শীর্ষে থাকলেও তারা খেলেছে মাত্র ৫ ম্যাচ। তাই রান রেটের দিক থেকে এগিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে হার্দিক পান্ডিয়া-রশিদ খানরা। আইপিএলে এখনো পর্যন্ত রান সংগ্রাহকদের দিক থেকে ২৭২ রান নিয়ে শীর্ষে আছেন জস বাটলার। এরপর ২৩৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে লোকেশ রাহুল এবং ২২৮ রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে হার্দিক পান্ডিয়া।

উইকেট শিকারের দিক থেকে ১২ উইকেট নিয়ে শীর্ষে আছে যুজবেন্দ্র চাহাল, ১১ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছেন নটরাজন ও আবেশ খান এবং ১০ উইকেট নিয়ে চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে আছে কুলদীপ যাদব, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও উমেশ যাদব।এসএইচ

LEAVE A REPLY