নড়াইলের লোহাগড়ায় মটিয়াডাঙ্গা গ্রামে ছাগল চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দুই ভাইকে গাছে বেঁধে বেধড়ক মারপিট ও সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ ওই ছাগল পাশের এক বাড়িতে পাওয়া যায়।
মেম্বার কালাম মুন্সী ও আজমল মুন্সির নেতৃত্বে মটিয়াডাঙ্গা গ্রামের ফরিদ শেখ ও তার চাচাতো ভাই তরিকুল ইসলামকে নির্যাতন করে বলে জানা গেছে। আহতদের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নির্যাতনের ভিডিও ঘটনার পর দিন সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জের ধরে উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামে নির্বাচিত মেম্বার কালাম মুন্সীর নেতৃত্বে রোববার সকালে ৮-১০ জন পরাজিত মেম্বর প্রার্থী সহিদুলের সমর্থক রশিদ শেখের ছেলে ফরিদ শেখ (৩০) ও রউফ শেখের ছেলে তরিকুল ইসলামকে (২৫) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নান্নু শেখের দোকানের সামনে গাছের সঙ্গে বেঁধে তিন ঘণ্টা ধরে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় তাদের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। আহত অবস্থায় এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে ভর্তি নির্যাতনের শিকার ফরিদ শেখ ও তরিকুল ইসলাম জানান, মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের জাফর মুন্সীর ছেলে মেম্বার কালাম মুন্সির নির্বাচন না করায় আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় জুলুম নির্যাতন ও অত্যাচার করে আসছিল। এরই জের ধরে মেম্বারসহ আজমল, নান্নু, ইজাজুল, রমজান, হুমায়ুন কয়েকজন রোববার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নান্নুর দোকানের পাশে গাছের সঙ্গে বেঁধে প্রতিবেশী লুটিয়া গ্রামের হাই মুন্সীর একটি ছাগল চুরির মিথ্যা অপবাদে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তাদের মারপিট করতে থাকে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে ওই ছাগলের মালিকের বাড়ির পাশে অন্য একটি বাড়িতে ছাগলের সন্ধান পেলে আমাদের অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে তারা চলে যায়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য কালাম বলেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত না।
ছাগল চুরির ঘটনায় তাদের লাঠি দিয়ে দুইটা বাড়ি দেওয়ার কথা স্বীকার করে অপর অভিযুক্ত আজমল মুন্সি বলেন, এছাড়া তাদের কোনোভাবেই নির্যাতন করা হয়নি। ছাগল পাওয়ার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতনের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়- মেম্বারের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত আজমল, নান্নু ও ইজাজুলসহ কয়েকজন মিলে তরিকুল ও ফরিদ শেখকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করছে।
লোহাগড়া থানার ওসি শেখ আবু হেনা মিলন জানান, নির্যাতনের বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হবে।