টালিউড নায়িকার রহস্যজনক মৃত্যু: পুলিশি জেরায় আরেক অভিনেত্রী ভাবনা

কলকাতার টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পল্লবী দের চাঞ্চল্যকর মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তদন্তকারীরা। 

ইতোমধ্যে পল্লবীর প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তীকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হয়েছে। আলিপুর কোর্টের নির্দেশে আগামী ২৬ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে থাকবেন সাগ্নিক। 

তবে শুধু সাগ্নিককে জিজ্ঞাসাবাদেরই সন্তুষ্ট নন তদন্তকারী কর্মকর্তারা; প্রয়াত অভিনেত্রীর দুই ঘনিষ্ঠ বান্ধবী প্রত্যুষা পাল ও ভাবনা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তারা।

এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জেরার মুখে পড়েছেন ভাবনা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

কারণ অভিনেত্রীর মৃত্যুর মাত্র তিন দিন আগে (গত বুধবার) সাগ্নিক ও পল্লবীর সঙ্গে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন ভাবনা। 

তা ছাড়া পল্লবীর পরিবারের অভিযোগ ছিল, সাগ্নিকের সঙ্গে তাদের মেয়ের সম্পর্কে টানাপোড়েনে তাদের কোনো এক বান্ধবীর হাত ছিল। আর অনেকের ধারণা ছিল সেই বান্ধবীটি ভাবনা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পল্লবীভক্তদের অনেক গালমন্দ শুনেছেন ভাবনা।

এসব কারণেই শুক্রবার বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে পুলিশি প্রশ্নবাণে জর্জরিত হন ভাবনা। 

জেরায় কি কি জানিয়েছেন ভাবনা, সে প্রশ্ন করা হলে ‘মা’খ্যাত অভিনেত্রী জানান, পল্লবীর মৃত্যুর পর সাংবাদিকরা যেসব প্রশ্ন করেছিলেন, পুলিশও সেগুলোই করেছে।

সাংবাদিকদের বলেন ভাবনা, ‘আমি এমন কিছু প্রশ্নের মুখে পড়িনি যা সংবাদমাধ্যম আমাকে করেনি। আপনাদের যা বলেছি ওখানেও সেই কথাই বলেছি। সাগ্নিককে কীভাবে চেনেন ভাবনা? কতদিনের পরিচয়? সাগ্নিক আর পল্লবীর মধ্যে কোনো ঝামেলা হয়েছিল কিনা-এসবই জানতে চেয়েছে পুলিশ। ’

এর আগে এক বক্তব্যে, ভাবনা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, মৃত্যুর দিন পল্লবী খুব স্বাভাবিক আচরণ করেন।

সাগ্নিক আর পল্লবী ‘হ্যাপি গো লাকি’ কাপল ছিল মন্তব্য করে ভাবনা বলেছিলেন, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া করত দুজনে। হুট করে প্রায়ই ঘুরতে চলে যেত তারা। আর সেখানে তাদের সঙ্গে থাকত পার্সোনাল ফটোগ্রাফার। সেই ফটোগ্রাফার আইফোনে ওদের ছবি তুলে দিত। মূলত এই ফটোগ্রাফারের খরচ সাগ্নিক দিত। কারণ যে ছেলেটি ওই ছবি তুলে দিত সে ওর চেনা ছিল।
 

প্রসঙ্গত, গত ১৫ মে পশ্চিমবঙ্গের গড়ফা নামক এলাকার নিজ ফ্ল্যাট থেকে অভিনেত্রী পল্লবীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অভিনেত্রীর এমন মৃত্যুতে বিস্মিত কলকাতার বাসিন্দারা। কারণ মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও নেটমাধ্যমে উচ্ছ্বল, প্রাণবন্ত দেখা যায় পল্লবীকে।

এমন হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় ঘরে ফিরে কি করে আত্মহত্যা করতে পারেন কেউ? সেই প্রশ্ন জনমনে। তা ছাড়া পল্লবীর ঘর থেকে কোনো সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়নি এখনবধি। 

এরই মধ্যে সন্দেহর তীর পল্লবীর প্রেমিক সাগ্নিকের বিরুদ্ধে। 

কলকাতার সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, কলকাতার গড়ফা এলাকার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে কয়েক মাস ধরে প্রেমিকের সঙ্গে বসবাস করছিলেন পল্লবী। বিয়ে করেননি পল্লবী, ওই যুবকের সঙ্গে লিভ-ইনে ছিলেন।  দুজনের মধ্যে সম্পর্কও ছিল চমৎকার।  শনি ও রোববার দুজনের মধ্যে কোনো একটি বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়েছিল।  

‘আমি সিরাজের বেগম’ সিনেমায় লুৎফা’র চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন অভিনেত্রী পল্লবী দে। এ ছাড়া ‘রেশম ঝাঁপি’, ‘কুঞ্জছায়া’ ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন। বর্তমানে ‘মন মানে না’ নামে একটি ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছিলেন।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার পত্রিকা

LEAVE A REPLY