ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের মিছিলে রড, হকস্টিক, লাঠি নিয়ে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রদলও হামলা প্রতিরোধের চেষ্টা করে। ফলে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পালটা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও দোয়েল চত্বর, টিএসসি এলাকায় এসব চলে। এতে উভয় ছাত্র সংগঠনের প্রায় ৫০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে হামলার সময় ছাত্রদলের দুই নেতাকে ড্রেনে ফেলে পিটিয়েছে ছাত্রলীগের একাধিক কর্মী।
অপরদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মারধর করে ছাত্রদলের কর্মীরা। ছাত্রদলের আহত নেতাকর্মীদের হলি ফ্যামিলি ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি আহত নেতাকর্মীদের শারীরিক অবস্থার খবর নেন। এদিকে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগের কর্মীরা রড, হকস্টিক, লাঠি, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে তাদের বেধড়ক পেটানো হয়। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানোর জন্য ছাত্রলীগ কয়েক দিন ধরেই ক্যাম্পাসে মহড়া দিচ্ছে। মঙ্গলবার তার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটল।
অপরদিকে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ছাত্রলীগ নয়, ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলকে প্রতিহত করেছে।
হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা বলেন, ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। এর বিপরীতে গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠায় ছাত্রসমাজের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। আমরা ছাত্র সমাজের সেই বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।
ক্যাম্পাসের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে তার বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, পদ্মা সেতু ইস্যুতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশ করে ছাত্রদল।
ছাত্রলীগের অভিযোগ, সেই সমাবেশে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। এরপর থেকেই ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে ছাত্রদলকে প্রতিহতের ঘোষণা দেন।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকের সেই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করার ঘোষণা দেয় ছাত্রদল।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল থেকে টিএসসিতে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দেয়।
তারা শহিদ মিনারের সামনে পৌঁছলে সেখানে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া জগন্নাথ হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হল, শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হকসহ বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ছাত্রদলের প্রায় ৩০ নেতাকর্মী আহত হন। তাদের ঢাকা মেডিকেল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, আমি, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আকতার হোসেন ও সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমানসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে টিএসসির দিকে যাচ্ছিলাম।
দুদিন ধরে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসের মহড়া দিচ্ছে বলে মিছিলে আমরা কোনো স্লোগান পর্যন্ত দিইনি। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিলেন। তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলি। বলি যে ‘আমরা তো শান্তিপূর্ণভাবে যাচ্ছি, আমাদের অপরাধটা কী?’
তিনি বলেন, বিনা উসকানিতে তারা হকিস্টিক, রড, চাপাতি, লাঠিসোঁটাসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন। হামলায় কেন্দ্রীয় নেতা রাশেদ ইকবাল খান, আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়াসহ অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।
এদিকে ঢাকা মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া শেষে বেলা ১১টার সময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের নেতৃত্বে একটি মিছিল দোয়েল চত্বর দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পালটা ধাওয়া হয়।
এ সময় এক পক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে টিএসসিতে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রড, হকিস্টিক, লাঠি, দেশীয় অস্ত্র ইত্যাদি নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দিলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পিছু হটতে বাধ্য হন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছাত্রদলে দুই নেতা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এজিএস আল আমিন বাবলু, ঢাকা মহানগর ছাত্রদল নেতা মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে ড্রেনে ফেলে বেধড়ক মারধর করেন ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী।
এ সময় তাদের বলতে শোনা যায় এত বড় সাহস ছাত্রদল করিস। পরে ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক তুহিন রেজা, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের নেতা সৈয়দ শরিফুল আলম শফুর হস্তক্ষেপে ড্রেন থেকে তোলা হয় তাদের।
পরে আরও কয়েক দফায় তাদের মারধর করে রিকশায় তুলে দেওয়া হয়। রিকশায় তোলার পর আবার লাথি মেরে ফেলে দিতে দেখা যায়। পা ভেঙে যাওয়ায় রিকশায় উঠতে না পারলে ছাত্রলীগের দুই কর্মী তাদের তুলে দেন।
জানতে চাইলে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আখতার হোসেন বলেন, নেতাকর্মীদের চিকিৎসা শেষে আমরা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ বাধা দেয়। আমরাও প্রতিরোধ করার চেষ্টা করি। পরে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা এসে আবার আমাদের ওপর হামলা চালায়।
ছাত্রলীগ নয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় প্রতিহত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সাদ্দাম বলেন, মিছিল-মিটিংয়ের আড়ালে তাদের যে সন্ত্রাসী রূপ সেটি কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবসময় প্রতিহত করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি ছাত্রলীগ সমর্থন করেছে। এছাড়াও ছাত্রদলের হামলায় আমাদের প্রায় চারজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আমরা দেখেছি তাদের মিছিল-মিটিংয়ে যারা থাকে তারা কেউই সাধারণ শিক্ষার্থী নয়। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রানিং শিক্ষার্থী না। সমসাময়িক কোনো ঘটনা যখনই ঘটে তখনই তারা তা ছাত্রলীগের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করে।
ছাত্রদলের আহতরা হলেন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আকতার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম-আহ্বায়ক সজীব মজুমদার, এবিএম এজাজুল কবির রুয়েল, আবু সুফিয়ান, মোস্তাফিজুর রহমান, শাহজাহান শাওন, হাসান আল আরিফ, মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল, আহ্বায়ক সদস্য মানসুরা আলম, ওমর সানী, আহ্বায়ক সদস্য নাহিদুজ্জামান শিপন, মওদুদ হোসাইন মঈন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের সভাপতি তারেক হাসান মামুন, সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল, মুহসীন হলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, এফ রহমান হলের কর্মী সেজান মাহমুদ, ইডেন মহিলা কলেজের আহ্বায়ক শিরিন আক্তার, সদস্য সচিব সানজিদা ইসলাম জুলিসহ আরও অনেকে। ছাত্রদলের হামলায় ছাত্রলীগের আহতরা হলেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম সানাউল্লাহ, গণিত বিভাগের নাজমুল হোসেন নিলয়, ফলিত রসায়ন বিভাগের মো. নাফিস ফুয়াদ, বায়কেমিস্ট্রি বিভাগের জাহিদ হাসান রুবেলসহ অনেকে।
দুপক্ষের ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের সময় ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন আহত হন। তারা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সায়েম সানাউল্লাহ, গণিত বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের নাজমুল হোসেন নিলয়, ফলিত রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের মো. নাফিস ফুয়াদ (৪র্থ বর্ষ), বায়কেমিস্ট্রি বিভাগের ২০১৭-১৮সেশনের জাহিদ হাসান রুবেল।
বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নিন্দা : ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন স্বৈরাচারী সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ক্যাম্পাসগুলোকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে ছাত্রলীগ। ন্যূনতম গণতান্ত্রিক চর্চার পথ রুদ্ধ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রদলের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ।
হামলায় জড়িতদের শাস্তি দাবি সাদা দলের : ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের শাস্তি দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
মঙ্গলবার রাতে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মত-পথের শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ নেই।
ছাত্রলীগ হল এবং ক্যাম্পাসে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। হলসমূহে গেস্টরুম কালচারের নামে ভিন্নমত এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচার ও নিপীড়ন চালিয়ে এক রকমের ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করছে।
ছাত্রদলের ২ দিনের কর্মসূচি : ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়) ও শুক্রবার সারা দেশের জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে ছাত্রদল।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন।
এ সময় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগ হকিস্টিক, রড, রামদা, চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেই এই হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।