খুলনা ও পটুয়াখালীতে বিএনপির সমাবেশে হামলা, আহত ৩৫

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় তাদের সহযোগিতা করেছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগকর্মীরা। পটুয়াখালীতে বিএনপির সমাবেশে হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩৫ জন। ব্যুরো ও প্রতিনিধির পাঠানো খবর-

খুলনা : বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কেডি ঘোষ রোডে বিএনপির কার্যালয় ও পিকচার প্যালেস মোড়ে বিএনপির সঙ্গে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। বিএনপি নেতাকর্মীরাও ইটপাটকেল ছুড়ে মারেন। বিএনপির দাবি, তাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত এবং ১৫ জন আটক হয়েছেন। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পিকচার প্যালেস মোড়ের সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে বিএনপির কার্যালয় থেকে ইট-পাটকেল মারা হয়। এরপর সংঘর্ষ হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে কেডি ঘোষ রোডে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বেলা ৩টায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হয়। এ সময় দলের কার্যালয়ের নিচে অস্থায়ী মঞ্চে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সমাবেশ সফল করার জন্য খুলনা মহানগর ও জেলার সব থানা, ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা আসতে থাকেন। বিকাল ৪টার দিকে ডুমুরিয়া বিএনপির একটি মিছিলে খুলনা প্রেস ক্লাবের অদূরে একটি পার্ক থেকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ হামলা করে। এ ঘটনার পর পুলিশ বিএনপির মিছিল পণ্ড করতে হামলা চালায়। তারা মঞ্চ ভাঙচুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পি জানান, বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম জানান, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের সমাবেশে হামলা করা হয়েছে। নগরের সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক রেহেনা ঈসা, ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেনসহ ২০-২৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতের বেশি।

নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল বলেন-বিএনপির সমাবেশস্থলের ভবনগুলো থেকে আমাদের মিছিলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় ৪-৫ জন আহত হন। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের কর্মীরা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েন।

নগর যুবলীগের আহ্বায়ক শফিকুর রহমান পলাশ জানান, যুবলীগ পুলিশের সহযোগিতায় বিএনপির ওপর কোনো হামলা করেনি। তাদের নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং আছে। এ বিষয়ে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান আল মামুনকে একাধিকবার ফোন করলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

পটুয়াখালী : বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের বনানী সড়কে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি বলেন-বৃহস্পতিবার দুপুরে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার প্রধান অতিথির বক্তৃতা শুরু করেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের আহত করে।

এতে জেলা যুবদল সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, সাধারণ সম্পাদক তৌফিক আলী খান কবির, পৌর যুবদল নেতা আতিকুর রহমান, দুমকি উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন, দুমকি উপজেলা যুবদল নেতা ফারুক হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি মেহেদী হাসান শামীম, জেলা ছাত্রদল নেতা তানভীর হোসেন, পৌর ছাত্রদল নেতা তানভীর আহম্মেদ, আবির হাসান, মো. আমীনুল ইসলাম সুমন, কাওসার আহম্মেদ এবং মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা সীমাসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগ নেতা হৃদয় আশীষ বলেন-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির প্রতিবাদে ছাত্রলীগের উদ্যোগে সরকারি কলেজ চত্বর থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি বনানী এলাকায় পৌঁছলে যুবদল-ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা আমাদের মিছিলের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমরা প্রতিবাদ করে তাদের প্রতিহত করি।

পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন-খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ ছাত্রলীগের সঙ্গে তাল মিলিয়েছে, হামলা করেছে এ অভিযোগ সত্য নয়।

LEAVE A REPLY