তরুণীকে ধর্ষণচেষ্টার তিন দিন পর সেই বাস ব্যবহার হয় ছিনতাইয়ে

চট্টগ্রামে একটি বাস অপরাধ কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হয়ে গেছে। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে বাসটিতে তরুণী ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ ঘটেছে।

ছিনতাইকারী চক্রের তিন সদস্যকে সোমবার রাতে গ্রেফতারের পর এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। 

পুলিশ জানিয়েছে, নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে বাসটি ব্যবহার করা হয়েছে। এজন্য বাসটির পেছনে নম্বরপ্লেট লাগায়নি অপরাধচক্রটি। সামনের নম্বরপ্লেটটি বাম্পার দিয়ে কৌশলে ঢাকা, দেখা যায় না কিছুই।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) মো. আবদুল ওয়ারীশ গণমাধ্যমকে বলেন, নম্বরপ্লেট আড়ালে রেখে একই বাস দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। তরে দুটি ঘটনায় ওই বাসে আলাদা চালক ছিলেন। বাসটিকে আরও অপরাধে ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তদন্ত করা হচ্ছে। 

এমন অপরাধ কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হয়ে ওঠা বাসের সত্ত্বাধিকারীকে কে প্রশ্নে আবদুল ওয়ারীশ বলেন, আমরা খোঁজ নিয়েছি। বাসটির মালিক প্রবাসী। এটি দেখাশোনার জন্য এক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তাকে খুঁজছি আমরা। তাকে পেলেই জানতে পারব যে, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে বাসটি অপরাধের কাজে ভাড়া দিচ্ছেন, নাকি এর চালক, হেলপাররা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত ১৯ মে নগরের বাকলিয়া রাহাত্তারপুল এলাকায় চলন্ত বাসে ধর্ষণের চেষ্টা করায় চালককে ঘুষি মেরে লাফ দেন ১৯ বছর বয়সি এক পোশাককর্মী। বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হন ওই পোশাককর্মী। ছয় দিন পর জ্ঞান ফিরলে পুলিশকে ঘটনার বিস্তারিত জানান।

পরে ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে ওই তরুণীর লাফ দেওয়ার সত্যতা পায় পুলিশ। এ ঘটনায় ২৫ মে রাতে হাটহাজারীর কুয়াইশ এলাকা থেকে বাসচালক আনোয়ার হোসেন এবং তার সহকারী জনি দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই সঙ্গে জব্দ করা হয় ঘটনায় ব্যবহার করা বাসটি। 

তবে ওই ঘটনার তিনদিন পরই ওই বাস ছিনতাইয়ে ব্যবহার করা হয় বলে জানান পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজুর রহমান। 

তিনি বলেন,  ২২ মে রাতে অলংকার মোড় থেকে মো. পারভেজ নামের এক ব্যক্তি সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি যাওয়ার জন্য ওই বাসে ওঠেন। এটি কিছু দূর যাওয়ার পর যাত্রীবেশে থাকা তিন ছিনতাইকারী তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে তার হাত-পা বেঁধে নগরের খুলশী সেগুনবাগান এলাকায় ফেলে যান তারা। পারভেজ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর অজ্ঞাতপরিচয় ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে পাহাড়তলী থানায় গত শুক্রবার মামলা করেন। বাকলিয়া থানা-পুলিশের হাতে জব্দ হওয়ার পরই  জানা যায় দুটো ঘটনায় এই বাসই ব্যবহৃত হয়েছে। গ্রেফতার ছিনতাইকারীরা বাসটি ছিনতাইসহ নানা কাজে ব্যবহারের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

আসামিরা হলেন – আশরাফুল ইসলাম (২৮), মো. মিন্টু (২৫) ও নঈম উদ্দিন (২১)। তাদেরকে রিমান্ডে নিলে হাবিবুর রহমান নামে আরেকজনের কথা জানায় তারা। সোমবার রাতে চান্দগাঁও এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় হাবিবকে।

LEAVE A REPLY