নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর আমদানি, মজুদ, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ী নেতাদের নিজ নিজ খাতে আরও দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। কারসাজি করা সামান্য কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর দায় এফবিসিসিআই নেবে না বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) এফবিসিসিআই আয়োজিত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর আমদানি, মজুদ, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, বিলাস পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হলেও ধনীরা কনতে পারে, কিন্তু সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে যা খুশি তা করা যাবে না। কারসাজি করে কেউ যাতে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ী নেতাদেরকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
অসাধু ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ আর আগের বাংলাদেশ নেই। মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। সরকারও এখন অনেক বেশি শক্ত অবস্থানে। অসাধু ব্যক্তিদের খুজে বের করা সরকারের কাছে কঠিন কিছু নয়। কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে মসলা, তেল ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। সততা ও স্বচ্ছতা দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান মো. জাসিম উদ্দিন।
তিনি আরও বলেন, কিছু প্রতিষ্ঠান চাল, ডাল, চিনি, লবন ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে প্যাকেট করে বাজারজাত করে। তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা দরকার। এসময়, ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে রাইস ব্রান অয়েলের ব্র্যান্ডিং ও ব্যবহার বাড়ানোর আহ্বান জানান সভাপতি।
বাজারে ধান ও চালের দাম কমানো অব্যাহত রাখতে খুচরা ও মিল মালিকদের নিয়মিত আলোচনার মাধ্যমে ন্যূনতম লাভে পণ্য বিক্রি করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
দিনাজপুর চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মো. মোসাদ্দেক হোসেন চালের দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে জানান, কৃষক পর্যায়ে ধানের দাম বেশি। বন্যায় বোরো ধান উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় আগের থেকে দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে ধান। এছাড়া চাল উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যাংক যুক্ত হওয়ায় পুজি বেড়েছে, ধান কেনার প্রতিযোগিতাও বাড়ছে যা চালের দাম বাড়ানোর কারণ।
বাংলাদেশ অটো মেজর হাস্কিং মিল ওনার্স অ্যসোসিয়েশনরে সহ-সভাপতি শহিদুর রহমান পাটোয়ারী (মোহন) অভিযোগ করেন, স্টক বিজনেস যারা করেন তাদের কাছে অনেক সময় মিলারদের থেকে বেশি ধান মজুদ থাকে যা চালের মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। ‘চালের ন্যায্যমূল্য’ শব্দটা এর কাঁচামাল ধানে প্রয়োগ করা উচিৎ।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বাজারে মসলা, তেল ও লবণের কোনো ঘাটতি নেই। দাম বাড়ারও সম্ভাবনা নেই বলে সংশ্লিষ্ট খাতের মিলার ও পাইকাররা জানিয়েছেন। এছাড়া ১৫ দিন পর পর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য নির্ধারণ, গরম মসলা আমদানির শুল্ক কমানোর দাবি জানান তারা।
সভায় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, সালাহউদ্দিন আলমগীর, মো. হাবীব উল্ল্যাহ ডন ও পরিচালকরা ।ডি- এইচএ